শ্রীকান্ত ভুঁইয়া, স্থানীয় সংবাদ, ঘাটাল: চাকরি নেই, এদিকে সরকারি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা [✔‘স্থানীয় সংবাদ’-এর সমস্ত কিছু জানতে এখানে ক্লিক করুন] নিয়ম ভেঙে চুটিয়ে টিউশনি চালিয়ে যাওয়ায় দিন দিন প্রাইভেট টিউটরদের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা কমছে। সেই হতাশায় ‘আত্মহত্যার’ পথ বেছে নিলেন দাসপুর থানার দুর্গাপুরের বাসিন্দা এক প্রাইভেট টিউটর। এই ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী সহ স্থানীয় বাসিন্দারা ওই মৃত্যুকে কোনও ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না।
ওই প্রাইভেট টিউটরের নাম বিশ্বজিৎ পাত্র(৩৬)। গত রাতে তাঁর নিজের শোবার রুম থেকেই তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশেরও প্রাথমিক অনুমান বিশ্বজিৎবাবু মানসিক অবসাদে আত্মহত্যাই করেছেন।
ইংরেজিতে মাস্টার্স বিশ্বজিৎবাবু এলাকায় জনপ্রিয় ইংরেজির শিক্ষক ছিলেন। গৌরাতে তাঁর নিজস্ব একটি স্টাডি সেন্টার রয়েছে। সেখানে তিনি ইংরেজি পড়ানোর পাশাপাশি স্পোকেন ইংরেজিও শেখাতেন। এছাড়াও কয়েক জায়গায় বাড়ি গিয়েও টিউশনি করাতেন। দাসপুর-২ ব্লকের একটি মাদ্রাসা স্কুলে পার্টটাইমার হিসেবেও যুক্ত ছিলেন তিনি। কিন্তু স্কুল খোলার পর থেকে বিশ্বজিৎবাবুর ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ক্রমশ কমে যাচ্ছিল। ছাত্রছাত্রীরা জানায়, স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের চাপে তাদেরকে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছেই টিউশনি পড়তে বাধ্য হতে হচ্ছে। সেজন্য তারা বিশ্বজিৎবাবুর কাছে টিউশনি পড়া ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে। সামান্য কয়েক দিনের মধ্যে বেশ কয়েক জন ছাত্রছাত্রী কমে যাওয়ার জন্য বিশ্বজিৎবাবু হতাশায় ভুগছিলেন। কারণ মা-বাবা, স্ত্রী কন্যাকে নিয়ে পাঁচ জনের সংসার টিউশনির উপরেই নির্ভর করত। বাবারও কিডনির সমস্যা। তাঁরও প্রচুর টাকা ব্যয় করে চিকিৎসা চলছে।
৮ জুলাই রাতে তিনি গৌরার স্টাডি সেন্টার থেকে অনেক রাতে বাড়ি ফিরে একাই একটি রুমে ছিলেন। রাত আড়াইটা নাগাদ রুমের মধ্যে শব্দ পেতে দেখা যায় রুমটি ভেতর থেকে লাগানো। বাড়ির লোকেরাই রুমের দরজা ভেঙে দেখেন বিশ্বজিৎবাবুর দেহ সিলিং ফ্যানে ঝুলছে। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে উদ্ধার করে গৌরার একটি নার্সিং হোমে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।