তৃপ্তি পাল কর্মকার: লকডাউনের কদিন পর থেকেই সারমেয়দের তিনবেলা নিজে হাতে রান্না করে খাওয়াচ্ছেন দাসপুর ২ ব্লকের হাজরাবেড়ের সমর মণ্ডল। লকডাউন শুধু মানুষের পেটে টান ধরায়নি, ধরিয়েছে ওদেরও। এর ওর ঘর,চা দোকান থেকেই ওরা খাবার পেত। করোনা অতিমারীর প্রভাবে চলছে লকডাউন। দোকানদানি বন্ধ, গৃহস্থের গেটে তালা, ঘরের মধ্যেই সবাই কাজ মিটিয়ে নিচ্ছেন। তাই এবাড়ি ওবাড়ি বুলে বেড়িয়েও খাবার পায়নি পাড়ার কালু ভুলু লালুরা।
বুঝতে পারছেন তো এরা কারা? এরা সারমেয়। রাস্তার কুকুর। সেই পুরোনো প্রস্তর যুগ থেকে মানুষের কাছে কাছে থাকতেই ওরা অভ্যস্থ। সেই মানুষ এখন গৃহবন্দী। তাই পেটে টান পড়েছে ওদের। মধ্য পঞ্চাশের সমরবাবু বরাবর সারমেয় ভালোবাসেন। পেশায় তিনি স্বর্ণশীল্পি। কাশীতে সোনার দোকান সমর বাবুর। লকডাউনের বহু আগে থেকেই তিনি গ্রামে রয়েছেন। এমনিতেই পশু পাখি ভালোবাসেন সমরবাবু। পথকুকুরদের এই না খেতে পাওয়াটা খুব কষ্ট দিচ্ছিল তাকে।
তাই সিদ্ধান্ত নেন নিজেই রান্না করে খাওয়াবেন কুকুরদের। সেই মত নিজেই আয়োজন করে ফেলেন। রামনগর দুবরাজপুর তেমাথা মোড়ে রান্না করে নিয়মিত তিন বেলা খাওয়াচ্ছেন আটটি কুকুরকে। খাওয়ানোর সময় অন্য কুকুর এসে দাঁড়ালেও তাকেও ফেরানো হয় না।
একঘেয়েমি খাবার দেওয়া হয়না। পাল্টে পাল্টে মেনুতে বদল আনা হয়। প্রথমদিকে এলাকার মানুষ সমরবাবুর এই উদ্যোগ দেখে হাসাহাসি করলেও, এখন সবাই খুব ভালো ভাবে নিয়েছেন এই উদ্যোগটি। কেউ কেউ কুকুরদের রান্নার জন্য চাল দিয়ে যাচ্ছেন। কেউ চাল পাঠিয়ে দিচ্ছেন। লকডাউন না ওঠা পর্যন্ত কুকুরদের রান্না করে খাওয়াবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সমরবাবু।