তৃপ্তি পাল কর্মকার, ‘সম্পাদক’, স্থানীয় সংবাদ: বাড়ির লোকেরা ধরেই নিয়ে ছিলেন তাদের ছেলে আর দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাবে না। সেই ভাবেই চলছিল চন্দ্রকোণা-১ ব্লকের আঁধারিয়া গ্রামের রাজা জমাদারের। রাজা গন্ধবেড়িয়া হাইস্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। রাজা বলে, আমি [✔‘স্থানীয় সংবাদ’-এর সমস্ত কিছু জানতে এখানে ক্লিক করুন] ডান চোখে কিছুই দেখতে পেতাম না। মনে হয়েছিল এটাই স্বাভাবিক ঘটনা।
স্কুল সূত্রে জানা যায়, কিছু দিন স্কুলে রাষ্ট্রীয় বাল স্বাস্থ্য কার্যক্রমের(RBSK) কর্মসূচিতে একটি শিবির করতে গিয়েছিলেন ক্ষীরপাই হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ শেখ মহম্মদ আজিজ [•পাশের ছবিটি ডাঃ শেখ মহম্মদ আজিজের]। তিনিই রাজার দৃষ্টির অস্বাভাবিকতা দেখতে পেয়ে স্কুলেই বার বার দৃষ্টি পরীক্ষা করেন। তখই তিনি নিশ্চিৎ হন রাজার ডান চোখে বিশেষ এক ধরনের ছানি পড়েছে(Congenital Cataract)। যেটাকে অবিলম্বে অপারেশন না করালে ছাত্রটি সারা জীবনের মতো ওই চোখটিতে আর কখনই দেখতে পাবে না। এদিকে রাজার বাবা মোতিলাল জমাদার পেশায় রাজমিস্ত্রির জোগাড়দার। তিনি বলেন, ছেলে বাড়িতে ওই কথা বলতেই আমাদের জ্ঞান হারানোর মতো উপক্রম হয়। অপারেশনের অত টাকা কী করে পাব? কেই বা তদারকি করে আমাদের সহযোগিতা করবে?
না! মোতিলালবাবুকে কিছুই ভাবতে হয়নি। ডাঃ আজিজই ছাত্রটির চোখ অপারেশন করানোর জন্য নিজেই উদ্যোগ নেন। তিনিই জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে শুরু করে শিশু সাথী প্রকল্পের মাধ্যমে জেলার সঙ্গে যোগাযোগ করে সমস্ত ধরনের অনুমোদন নেন। সেই সঙ্গে ডাঃ আজিজ কলকতার সুশ্রূত আই ফাউন্ডেশন এবং রিসার্চ সেন্টারের কর্তৃপক্ষকে ব্যক্তিগত ভাবে অনুরোধ করে ওই অপারেশনটি করার ব্যবস্থা করেন। মোতিলালবাবু বলেন, ২৫ আগস্ট রাজার অপারেশনটি সুন্দর ভাবে হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যেই আমার ছেলেকে ছেড়ে দেওয়া হবে।
এনিয়ে ডাঃ আজিজ বলেন, রোগীদের শুশ্রূষা করা এবং পাশে দাঁড়ানোই চিকিৎসকদের কাজ। তবে এটা ঠিক ছাত্রটির দৃষ্টিশক্তির সমস্যাটি আমার চোখে না পড়লে পরিণতি হয়তো খুবই খারাপ হতে পারত। কারণ ওদের পরিবারের সদস্যরা বিষয়টিকে মোটেই গুরুত্ব দিয়ে দেখেননি।