শুভম চক্রবর্তী, স্থানীয় সংবাদ, ঘাটাল:পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ঘাটালে নবজোয়ার যাত্রায় তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের [✔‘স্থানীয় সংবাদ’-এর সমস্ত কিছু জানতে এখানে ক্লিক করুন] কনভয়ের ঢুকে দলের ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে নালিশ জানাতে গিয়ে সাসপেন্ড হলেন তৃণমূলের বুথ সভাপতি,শোকজের মুখে আরও দুই নেতা।
তৃণমূল সূত্রে খবর,রবিবার রাত সাড়ে নটা নাগাদ ঘাটালের বীরসিংহ থেকে অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের কনভয় ঘাটালে বিদ্যাসাগর হাইস্কুল মাঠে তাবুতে ফিরছিলেন।সেই সময় ঘাটালের জলসরায় চন্দ্রকোনা-ঘাটাল রাজ্যসড়কের উপর অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের কনভয়ের সামনে ঝাঁপ দিয়ে কনভয় আটকানোর চেষ্টা করা এমনকি কনভয়ের সামনে শুয়ে পড়ে ঘাটাল ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি দিলীপ মাঝির বিরুদ্ধে স্লোগান তুলে তাকে সরানোর দাবি তুলেন দলেরই তিন নেতা।দিলীপ মাঝি ঘাটালে দলের পদে থাকে দল ডুববে ওকে সরিয়ে প্রাক্তন বিধায়ক শঙ্কর দোলইকে দায়িত্ব দেওয়ার দাবি তুলেন তৃণমূলের তিন নেতা।এই তিন নেতা হলেন ঘাটালের মুলগ্রাম বুথের সভাপতি শেখ সোলেমান আলি,বীরসিংহ অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পাদক শেখ আবদুল রশিদ ও ঘাটাল ব্লক তৃণমূলের আইটি সেলের কর্মী দীপঙ্কর ঘোষ।শেখ সোলেমান আলির নেতৃত্বেই এই তিনজন তৃণমূল নেতা হঠাৎই অভিষেকের গাড়ির সামনে ঝাঁপিয়ে পড়ে রাস্তার উপর শুয়ে পড়েন বলে দলীয় সূত্রে খবর।দলীয় সূত্রে এও জানাযায়,কনভয় দাঁড়িয়ে গেলে গাড়ির কাঁচ নামিয়ে অভিষেক বন্দোপাধ্যায় তাঁদের ডাকেন এবং তাদের নাম পরিচয় জানতে চান।পাশাপাশি অভিষেক বন্দোপাধ্যায় ওইদিন এও জানিয়ে দেন,প্রকৃত তৃণমূল কর্মী এইভাবে গাড়ি আটকে ক্ষোভ প্রকাশ করে না,এসব দলে চলবে না।দলের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে তোমাকে সাসপেন্ড করছি বলেও জানিয়ে দেন খোদ অভিষেক বন্দোপাধ্যায়।অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই নির্দেশ ঘাটাল ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি দিলীপ মাঝির কাছে পৌঁছালে ওইদিন রাতেই অভিযুক্ত বুথ সভাপতি শেখ সোলেমান আলিকে সাসপেন্ড করা হয় এবং বাকি দুজনকেও শোকজ করা হবে বলেও জানাযায়।ঘটনায় রীতিমতো মুখে কুলুপ তিন অভিযুক্ত তৃণমুল নেতার।তবে এদের মধ্যে যাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে সেই মুলগ্রাম বুথের সভাপতি শেখ সোলেমান আলিকে ফোন করা হলে তিনি বেশিকিছু বলতে না চাইলেও ফোনে জানান,সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে শুনলাম তবে আমার হাতে কোনো লেটার আসেনি,অঞ্চলের প্রধানের কাছে সাসপেন্ড লেটার পাঠানো হয়েছে সেই আমায় জানিয়েছে।হটাৎ কেন সাসপেন্ড করা হল তাকে সে প্রশ্নের উত্তরে বুথ সভাপতি জানান,আমি হয়তো কিছু ভুল করেছি তাই সাসপেন্ড করেছে।অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের সাথে যে কথা হয়েছিল এবং ঘাটাল নিয়ে যে অভিযোগ জানিয়েছেন তা স্বীকার করেন সাসপেন্ডেড বুথ সভাপতি।অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের কনভয়ের সামনে শুয়ে পড়ার কথা মিথ্যা,খালি রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে হাত নেড়ে দাঁড়ানোর জন্য আবেদন করেছিলাম।তিনি আমাদের দলের সুপ্রিমো তেনার উপরে কিছু বার্তা দেওয়ায় যাবেনি আর বলাও যাবেনি।তিনি অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের সাথে কথা বলে সন্তুষ্ট কিনা সে প্রশ্ন এড়িয়ে যান।আমরা বুথে খাটি তাই বলেছিলাম উনি যা ভালো বুঝেছেন করেছেন।আমি ৯৮ সাল থেকে দল করি সাসপেন্ড করেছে ঠিক আছে কিন্তু দল ছাড়তে পারবো কি আমরা,ভোটটা তো দিতে পারবো দলকে ভোট দিতে পারবো তো।দলের ব্লক সভাপতি দিলীপ মাঝির বিরুদ্ধে তিনি কিছু বলেননি অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের কনভয় আটকে অন্য কেউ বলতে পারে সেই ঝড় হয়তো আমার উপর এসে পড়েছে বলে জানান সাসপেন্ড হওয়া তৃণমূলের বুথ সভাপতি শেখ সোলেমান আলি।এবিষয়ে ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি আশিষ হুদাইত বলেন,মুলগ্রামের বুথ সভাপতি শেখ সোলেমান আলি সহ কয়েকজন নেতৃত্ব ঘাটালের জলসরায় অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের কনভয় আটকানোর চেষ্টা করে কিছু কথা বলার চেষ্টা করে যা দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের সমান।দলের ওইসব নেতৃত্ব দলকে কালিমালিপ্ত করার জন্য ইচ্ছা করে মনগড়া কথা বানিয়ে বলার চেষ্টা করেছে।দলের যে স্তরে জানানোর দরকার সেখানে না জানিয়ে একেবারে জনসমক্ষে দলের ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করা হয়েছে এতে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ হয়েছে।অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মতো তাই তাকে সাথে সাথেই সাসপেন্ড করা হয়েছে এবং বাকিদেরও শোকজ করা হবে,৭ দিনের মধ্যে জবাব না দিলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে ঘাটাল জুড়ে। অন্যদিকে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ অর্থাৎ দিলীপ মাঝির বক্তব্য আমিও একজন মানুষ তাই সকলের কাছেই যে প্রিয় সব এমনটা হতে পারে না।আমার বিরুদ্ধে কারো অভিযোগ থাকতেই পারে সেটা জানানোর জন্য নির্দিষ্ট পদ্ধতি আছে।এই ঘটনা অনভিপ্রেত।তবে আমাদের দলের সৈনিক যা নির্দেশ দিয়েছেন আমি সেই মোতাবেক কাজ করেছি।
