সৌমেন মিশ্র, স্থানীয় সংবাদ, ঘাটাল: ১৯ নভেম্বর ঘাটাল শিলাবতী নদীর পাড়ে ইরিগেশান বাংলোয় এক অনন্য সন্ধ্যা উপহার দিলেন মহকুমার বিশিষ্ট [✔‘স্থানীয় সংবাদ’-এর সমস্ত কিছু জানতে এখানে ক্লিক করুন] কথাসাহিত্যিক পাপিয়া ভট্টাচার্য। দেশ, সানন্দা, বর্তমান, সাপ্তাহিক বর্তমান, সুখী গৃহকোণ ও অন্যান্য পত্র-পত্রিকায় তিনি গল্প লিখেছেন। ছোটগল্প ও উপন্যাসের অনন্যতায় তিনি জায়গা করে নিয়েছেন বাংলার অজস্র পাঠকের মনে। তাঁর ঘাটালের বাড়িতে বিভিন্ন সময়ে প্রথিতযশা সাহিত্যিক এসেছেন বন্ধুত্বতার টানে। গত ১৯ নভেম্বর পাপিয়াদেবীর বাড়িতে এসেছিলেন কথাসাহিত্যিক অনিতা অগ্নিহোত্রী। সঙ্গে ছিলেন বিশিষ্ট কবি গল্পকার তৃষ্ণা বসাক। মেদিনীপুর থেকে এসেছিলেন কবি ও গল্পকার সুমন মহান্তি। আলাপচারিতার আয়োজনে এই সন্ধ্যায় উপস্থিত ছিলেন মহকুমার বিশিষ্ট কয়েকজন লেখক, পাঠক ও পত্রিকা সম্পাদক। কবিতা, গল্প, কথায় এই অনন্য সন্ধ্যা স্মরণীয় হয়ে থাকল ঘাটালের বুকে। অনিতা অগ্নিহোত্রী নিজেও কবিতা পাঠ করেন। উপস্থিত সকলের লেখা তিনি মন দিয়েই শোনেন।
অনিতাদেবীর জন্ম কলকাতায়, ১৯৫৬ সালে। খুব ছোটবেলা থেকেই লেখালেখি শুরু। ১৯৬৯ সালে প্রথম কবিতা প্রকাশ সত্যজিৎ রায় সম্পাদিত সন্দেশ পত্রিকায়। ১৯৮০ র দশক থেকে কবিতার পাশাপাশি গদ্য লিখেছেন। বিমল করের উৎসাহে ছোটগল্প ও উপন্যাস লেখা। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, ছোটদের জন্য লেখা, প্রবন্ধ ও অনুবাদ মিলিয়ে প্রায় ৫০ টির মতো বই লিখেছেন। বহু গল্প ও উপন্যাস ইংরেজিতে অনুবাদ হয়েছে। ইংরেজি গল্প সংকলন সেভেনটিন এর জন্য The cross word economist book award পেয়েছেন ২০১২ তে। এছাড়াও গল্পমেলা পুরস্কার, শরৎ পুরস্কার, বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ সম্মান, সোমেন চন্দ পুরস্কার, গজেন্দ্র মিত্র পুরস্কার, প্রতিভা বসু স্মৃতি পুরস্কার ছাড়াও সম্মানিত হয়েছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রদত্ত ভুবন মোহিনী দাসী স্বর্ণ পদকে। তাঁর উল্লেখযোগ্য বই কাস্তে, মহুলডিহার নদী, কলকাতার প্রতিমা শিল্পীরা, আকিম নিরুদ্দেশ, মহানদী, মহাকান্তার, ছোটদের গল্প সমগ্র, শ্রেষ্ঠ কবিতা প্রভৃতি।
প্রসঙ্গত, যে ১৯৮০ সালে তিনি ভারতীয় প্রশাসনিক সেবার ওড়িশা ক্যাডারের জন্য নির্বাচিত হন। পরবর্তী ৩৭ বছর তিনি ভারত সরকারের বিভিন্ন প্রশাসনিক পদে নিযুক্ত ছিলেন। ফলে জীবনের দীর্ঘ সময় কাটিয়েছেন বাংলার বাইরে। তাই অনিতা অগ্নিহোত্রীর লেখায় উঠে আসে বাংলা ও তার বাইরের ভারতবর্ষের প্রান্তিক মানুষের অনুচ্চারিত কণ্ঠস্বর।