চৌধুরী সামসুল আলম: গত ইংরেজি ১ এপ্রিল ২০২১ তে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে ভোট হয়ে গেছে। ভোট ঘোষণার প্রায় একমাস আগে থেকেই ভোট করার তোড়জোড় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মূলত এস ডিও এবং বিডিও অফিসগুলো থেকে শুরু হয়েছিল। নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত সরকারি, আধাসরকারি কর্মচারি ও শিক্ষক কোনক্রমে গাফিলতি দেখালে তাদেরকে শো-কোজ নোটিশ পাঠানো হচ্ছে। সেখানে কোন খামতি নাই। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো গত ১ তারিখে যাদের ভোট ছিল সেই সব কর্মচারীদের এখন ও পর্যন্ত কোন পোস্টাল ব্যালট না আসায় তাঁরা তাঁদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। বিষয়টি কি কাকতালীয় অথবা উদ্দেশ্য প্রণোদিত?কারণ রাজ্যসরকারি কর্মচারি সহ শিক্ষকদের বড় অংশই রাজ্যসরকারের বিভিন্ন তুঘলকি সিদ্ধান্ত, বেতন কাঠামোর বৈষম্য, ভাতার অবলুপ্তি র কারণে ক্ষুব্ধ। গতবারের পোস্টাল ব্যালট গনণাতে সেটা প্রতিফলিত হয়েছিল। সেই কারণেই কি কৌশলে যাতে ভোটকর্মী হিসাবে যে বিপুল সংখ্যক কর্মচারী ও শিক্ষক ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত তাঁদেরকে তাঁদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হলো যাতে করে তাঁরা শাসকদলের বিপক্ষে ভোট দিতে না পারেন!
আশ্চর্য হওয়ার কিছু নাই। কারণ হলো পশ্চিমবঙ্গে প্রশাসনিক দপ্তরগুলোতে কর্মরত বিসিএস অফিসারদের একটা বড় অংশই তারা ন্যায় নীতি, আপন সত্তাকে জলাঞ্জলি দিয়ে কেবলমাত্র ব্যক্তিগত সুযোগ সুবিধা, খবরদারি, আত্মস্বার্থের তাগিদে এই ধরণের শাসকদলের স্বার্থবাহী এবং জনস্বার্থবিরোধী বিভিন্ন অপকর্ম করে যাচ্ছেন। এব্যাপারে রাজ্যসরকারি কর্মচারি সংগঠন, শিক্ষক সংগঠনগুলোকে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। প্রশাসনের উপরে চাপ সৃষ্টি সহ নির্বাচন কমিশনের কাছে এই বঞ্চনার কথাকে জানাতে হবে। পশ্চিমবঙ্গে বিগত দশ বছর ধরে শাসকদলের এই ধরণের অপকৌশল সম্পর্কে আমরা অবগত। এই ঘটনা সেই অপকৌশলের বাইরে নয়। প্রয়োজনে গণতান্ত্রিক অধিকার হিসাবে নিজের ভোটাধিকারকে সুরক্ষিত করতে যদি কর্মীরা মহামান্য হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় তাতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু থাকবে না।