তৃপ্তি পাল কর্মকার: একেই বলে বাড়ি ফেরার টান। বিশাখাপত্তনম থেকে হেঁটে দক্ষিণ দিনাজপুর! আজ ৭ মে সকালে এরকমই আত্মপ্রত্যয়ী বেশ কয়েকজন পরিযায়ী শ্রমিকদের দেখা মিলল রামজীবনপুর শহরে। রামজীবনপুর পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের দেওপুর গ্ৰামে আজ১৯জন পায়েহাঁটা পরিযায়ী শ্রমিকদের দেখা যায়। তাঁদের মধ্যে দু’জন গর্ভবতী মহিলাও রয়েছেন। চারদিন আগে তাঁরা বিশাখাপত্তনম থেকে পায়ে হেঁটে দক্ষিণ দিনাজপুরের ডালখোলার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। মাঝে ২০০ কিলোমিটার গাড়িতে আসতে পেরেছেন। তারপর আবার পায়ে হাঁটা। পথে কোথাও প্রশাসন ওদের সহযোগিতা যেমন করেনি, আটকেও দেয়নি। অভুক্ত অবস্থায় চারদিন হাঁটার পর রামজীবনপুরের দেওপুরের রাজ্যসড়কে পৌঁছায়। দেওপুর শিবশক্তি ক্লাবের সদস্যরা ওই শ্রমিকদের আটকান এবং এই হেঁটে আসার ঘটনাটি জানতে পারেন। ওই ক্লাবের উদ্যোগে দেওপুর গ্ৰামের বাইরে রাজ্যসড়কের ধারে এক পুকুর পাড়ে ,গাছের তলায় রান্নার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। চারদিন পর ওই শ্রমিকরা ভাত খেতে পান।
জানা গিয়েছে, এতদিন ওই সমস্ত শ্রমিকেরা বিশাখাপত্তনে এইচ.পি.সি.এলের নির্মাণ কাজে ঠিকাদারের অধীনে ঠিকা শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। লকডাউন হবার পর কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ঠিকাদার ওদের পাওনা না-দিয়ে চলে যান। জমানো টাকা দিয়ে এতদিন ওরা কোনোক্রমে চালিয়েছেন। টাকা শেষ হয়ে যাওয়ার পর বাড়ি ফেরার চেষ্টা করেন। হাঁটতে হাঁটতে আজ ওরা রামজীবনপুর পৌঁছান। পরে রামজীবনপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ রাম আশিস সিং ঘটনাস্থলে পৌঁছান। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ওদের সরকারি সেন্টারে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে এবং আগামী ২-৩দিনের মধ্যেই ওদের গাড়িতে করে বাড়ি পৌঁছনোর ব্যবস্থা করা হবে বলে আশিসবাবু আশ্বাস দেন। আপাতত দেওপুর শিবশক্তি ক্লাবের সদস্যরা ওই শ্রমিকদের দেখভাল করছেন। তবে চাল,ডাল সব্জির ব্যবস্থা আশিসবাবু করে দেবেন বলে জানিয়েছেন।