সনাতন ধাড়া:বর্তমানে প্লাস্টিকের তৈরি মালা, চাঁদমালা, ফুল, প্রতিমা সাজানোর গহনায় ছেয়ে গেছে বাজার। আর এই সব প্লাস্টিকের তৈরি সামগ্রীর সঙ্গে পাল্লা দিতে না পেরে ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে বসেছে বাংলার অন্যতম লোকজ শিল্প, শোলা শিল্প। অদূর ভবিষ্যতে এই শিল্পের করুণ পরিস্থিতির কথা ভেবে নতুন করে কেউ আসতে চাইছেন না এই পেশায়।
আগে দাসপুরের ভূতা, আজুড়িয়া, কামালপুর, সাগরপুর সহ বিভিন্ন এলাকায় মালাকার পরিবারের প্রায় সকল সদস্যই শোলার কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। বর্তমানে পুজোর কাজে ব্যবহৃত প্লাস্টিকের গহনা, ফুল, মালা ইত্যাদি নানা জিনিসপত্র আমদানির ফলে ভাটা পড়েছে তাদের শোলা শিল্পে। এমনটাই অভিযোগ করছেন সাগরপুরের প্রবীণ শোলা শিল্পী বলাই মালাকার, উমা মালাকার, লতিকা মালাকারেরা।
বলাইবাবু জানান, দশ পুরুষ ধরে তাঁরা এই শোলার কাজের সঙ্গে যুক্ত। শোলা দিয়ে টোপর, দেবদেবীর অলঙ্কার, মালা, গহনা, খেলনা ইত্যাদি তারা তৈরি করেন। কিন্তু এখন প্লাস্টিকের এধরনের বেশ কিছু জিনিস আমদানির ফলে প্রচণ্ডভাবে মার খাচ্ছে আমাদের এই শিল্প।
ঘাটালে ভারতী ঘোষের দেহরক্ষীর জামিন নাকচ
সাগরপুরের বলাই মালাকার, ভূতা গ্রামের গণেশ মালাকারেরা বলেন, আমাদের শোলা কিনতে হয় দড়ি মাপে। এক হাত দড়ির মাপে শোলা কিনতে খরচ পড়ে পঞ্চাশ টাকা, তার উপর জমিদারকে টাকা দেওয়া এবং মাল প্রস্তুত হওয়ার পর যা খরচ পড়ে সেটি বিক্রি করতে গেলে তার সঠিক মুল্য আমরা পাই না। আর আমাদের তৈরি শোলার সামগ্রীটি কিনতে ক্রেতাদের যা খরচ পড়ে বাজারে অর্ধেক মূল্যে প্লাস্টিকের সামগ্রী তারা পেয়ে যাচ্ছেন।
বাধ্য হয়ে টিকে থাকার জন্য লোকসানেই আমাদের এগুলি বিক্রি করতে হচ্ছে যা আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি। এই শিল্পে পরিশ্রম অনুযায়ী পয়সা পাওয়া যায় না। প্রবীণ শোলাশিল্পী সাগরপুরের বলাইবাবু ও লতিকা মালাকার বলেন, সরকারি সহায়তা না থাকলে বা কেউ নজর না দিলে বাংলার এই শিল্পটি ধীরে ধীরে হারিয়ে যাবে।
মোবাইলে নিয়মিত খবর পড়তে এইখানে ক্লিক করুন Whatsapp