আধুনিকতার চমক ডিজিটাল ইন্ডিয়ার যুগে ভারতের এগিয়ে বাংলায় থেকেও তারা দ্বীপান্তরে,দাবি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ডেবরা এলাকার চার চারটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মানুষের।
কংসাবতীর দুই শাখায় বিভক্ত হয়ে ডেবরা ব্লকের ভবানীপুর,আকালপৌষ,শ্যামনগর,পাটনার মত দশের অধিক গ্রামকে বিচ্ছিন্ন করেছে মেদিনীপুর,ঘাটাল,দাসপুর,কেশপুর বা পাঁশকুড়ার থেকে। একদিকে নাড়াজোল-ভবানীপুর অন্যদিকে টাবাগেড়িয়া-মকরামপুরের সংযোগস্থলে বাধা হয়ে কংসাবতী। প্রাকৃতিক বাধা এখানে আটকেদিয়েছে গ্রাম গুলির দৈনন্দিন জীবন যাত্রা ফলে গ্রামগুলি ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছে আধুনিকতা,স্বাস্থ্য,শিক্ষা সবদিক থেকেই। বহুদিনের দাবি ওই দুই সংযোগ স্থলে চাই সেতু।
এলাকাবাসীর দাবি তাদের গ্রামে নেই কোনো হাসপাতাল,ফলে রাতভিরেতে জরুরী অবস্থায় রোগীকে ডেবরা হাসপাতাল বা ঘাটাল,মেদিনীপুরের হাসপাতালেও নিয়ে যাওয়া দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে। অনেকক্ষেত্রে রোগী বিনা চিকিৎসায় মারাও যায়। স্থানীয়রা গর্ভবতী মহিলাদের বাচ্চা প্রসবের অনেক আগে থেকেই পরিবারের পরিজনেরা এলাকার বাইরের হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে ভর্তি করিয়ে দেন শুধুমাত্র যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকার কারণে। শুধু স্বাস্থ্য নয়,শিক্ষা ক্ষেত্রেও প্রতিবন্ধকতার শিকার ওই এলাকার ছাত্রছাত্রীরা। উচ্চমাধ্যমিক পাশের পর কলেজের পড়তে আর বাড়ি থেকে যাতায়াত করা সম্ভব হয় না। বাইরে থেকেই পড়াশোনা চালাতে হয়। অর্থাভাবে অনেককেই পড়া বন্ধ করে দিতেহয়।
ভোটের আগে প্রতিশ্রুতি আসে,সরকার আসে সরকার যায় তবুও গ্রামের মানুষের অতিপ্রয়োজনীয় আবদার মেটায়না কেউ। মাত্র দুটি সেতু বদলে দিতে পারত গ্রাম গুলোর ভবিষ্যৎ!
আজ মানুষ উঠে পড়ে লেগেছে গ্রাম গুলির দুইপারে দুটি সেতুর দাবি নিয়ে। সংগঠিতভাবেই তারা আজ ঐক্যবদ্ধ। গড়ে উঠেছে দ্বীপান্তর মুক্তি সংগ্রামী মঞ্চ। বারে বারে প্রশাসনের কাছে আবেদন নিবেদন করেও ফল মেলেনি। কিন্তু গ্রামের মানুষ দাবি আদায়ে বদ্ধপরিকর।
ওই মুক্তি মঞ্চের সম্পাদক গৌতম মাজী জানান,২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন ওই ভুক্তভোগী গ্রামগুলি ছাড়াও আশপাশের হাজার হাজার মানুষ মিছিল করে সেতু দুটি নির্মানের দাবি নিয়ে। মিছিল শেষে তারা ডেবরায় ৬ নং জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ করে ওই একই দাবিতে। খবর যায় জেলার উচ্চ দপ্তরে। টনক নড়ে প্রশাসনের। আন্দোলনকারীরা জানান পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা শাসক তাদেরকে আশ্বাস দিয়েছেন দুটি সেতু নির্মানের। সেই আশ্বাস পাবার পরই ওই দিন অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। মঞ্চের পক্ষে জানানো হয় আগামী ১৪ দিনের মধ্যে সেতুদুটি মঞ্জুর করে ২১ দিনের মাথায় কাজের অগ্রগতি দেখাতে হবে। জানাগেছে ২৮ জানুয়ারি জেলাশাসক এই বিষয়েই আন্দোলন কারীদের সাথে বসবেন। গৌতমবাবু হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন,আমাদের দাবি না মানলে আগামী নির্বাচনে আমরা এই চারটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ভোটাররা ভোট দান থেকে বিরত থাকবো।
মোবাইলে নিয়মিত খবর পড়তে এইখানে ক্লিক করুন Whatsap