কুঁড়েঘর পুড়ে ঘাটালে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হল তিনজনের। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে ঘাটাল থানার কিসমত কোতলপুরে।
সোমবার রাতে ঘুমের মধ্যেই খড়ের চালায় আগুন লাগলে ঘুমন্ত অবস্থায়ই মৃত্যু হয় ওই গ্রামে কাজ করতে আসা তিন শ্রমিকের। এই ঘটনায় গনেশ মান্ডিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে ঘাটাল থানার পুলিস। ওই রাতে ওই পুড়ে যাওয়া বাড়িতে যে চার জন ছিল তাদের মধ্যে একমাত্র জীবিত অক্ষত ছিল এই গনেশই। ঘরে আগুন লাগলে এই গনেশই গ্রামের অন্যান্যদের ডেকে তোলে।
গনেশ জানিয়েছে সে এবং তার স্ত্রী শ্রীমতি মান্ডি ছাড়াও ওইদিন ওই কুঁড়ে ঘরে ছিল সন্তোষ দাস ও সন্তোষের স্ত্রী সুন্দরী মুর্মু। এই সন্তোষের সাথে গনেশের পরিবারের ভীষণ ভালো সম্পর্ক ছিল। ওই রাতে তারা চারজনে মিলে রঘুনাথপুরে পঞ্চমী মেলায় যায়। সেখান থেকে খাওয়া দাওয়া সেরে বাড়ি ফিরে। পরে রাত একারোটা নাগাদ ঘুমের মধ্যে হঠাৎই তাদের ঘরে আগুন ধরেগেলে সে বেরিয়ে এলেও বাকিরা ওই ঘরের মধ্যেই রয়েযায়।
পরে গ্রামের লোকজন গিয়ে আগুন নেভাতে সক্ষম হলেও ততক্ষণে পুড়ে ছাই খড়েই চালের বাড়ি। বাড়ির মধ্য থেকে তিনটি পুড়ে যাওয়া দেহ পাওয়া যায়। ঘাটাল পুলিসে খবর গেলে ওই রাতেই ঘটনাস্থলে ঘাটালের এস ডি পি ও কল্যাণ সরকার,সি আই সুপ্রিয় বসু এবং ঘাটাল থানার ও সি দেবাংশু ভৌমিক ঘটনাস্থলে পৌঁছান। পুড়েযাওয়া দেহগুলির অবস্থা দেখে তাদের আর চিহ্নিত করারা উপায় ছিল না। ঘাটাল পুলিস এই মর্মান্তিক ঘটনার পূর্নাঙ্গ তদন্ত শুরু করে।
ওই পুড়ে যাওয়া বাড়ি সহ দেহগুলিকে পুলিস ঘিরে রাখে। আজ সকালে দেহগুলিকে ডি এন এ টেস্ট ও পোস্ট মর্টেমের জন্য মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়েছে। বাড়িটিতে ঠিক কীভাবে আগুন ধরেছিল সে বিষয়ে জানতে ঘাটাল পুলিসের তরফে ফরেনসিক বিভাগকে ডাকা হয়েছে। এখন ওই এলাকা পুলিস ঘিরে রেখেছে।
জানাগেছে গনেশের বাড়ি হুগলির আরামবাগের গোঘাটা ব্লকের তারাহাটে। প্রায় আট বছর ধরে কুঠিঘাট এলাকায় শ্রমিকের কাজ করত গনেশ ও তার স্ত্রী। প্রায় তিনমাস ধরে গনেশ ও তার স্ত্রী কিসমত কোতলপুরে রাজকুমার পন্ডিতদের দেওয়া একটি জায়গায় অস্থায়ী বাড়ি করে থাকত ও গ্রামের লোকের কাজ করে উপার্জন করত।
জলসরারা সন্তোষ দাসের সাথে তাদের ভালো বন্ধুত্ব ছিল। সন্তোষ সুন্দরী মুর্মুকে বিয়ে করলে জলসরায় সন্তোষের পরিবার সুন্দরীকে মেনে নেয়নি। গনেশ ও সুন্দরী ঘাটালের শ্যাওড়াগেড়িয়াতে থাকত।
গনেশ জানায়, দুর্ঘটনার রাতে মেলাথেকে মদ্যপ অবস্থায় ফিরে তারা চার জনেই ওই বাড়িতেই ছিল এবং ওই পুড়ে যাওয়া মৃতদেহগুলির মধ্যে তার স্ত্রী ছাড়াও সন্তোষ ও সন্তোষের স্ত্রী সুন্দরীরও মৃতিদেহ আছে।
স্থানীয়দের প্রশ্ন ওই বাড়িতে আগুন লেগে চারজন একেবারে পুড়ে প্রায় ছাই হলেও একা গনেশ কীভাবে অক্ষত থাকল। ঘটনা যাই হোক ঘাটাল পুলিসের পক্ষে সরেজমিনে তদন্ত শুরুহয়েছে।