নিজস্ব সংবাদদাতা, ‘স্থানীয় সংবাদ’, ঘাটাল: মাত্র দেড় মাসের বিবাহিত জীবন। তার মধ্যেই যে এভাবে পূর্ণচ্ছেদ ঘটবে কেউই তা দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারেননি। একটা বিকট শব্দ তারপর একটা দলা পাকানো গাড়ি ঘিরে রক্তের ধারা। তাতেই মুহূর্তের মধ্যে পাল্টে গিয়েছে অপর্ণার জীবন। ওই বিকট শব্দের মাঝেই স্বামী, মা, মামা-মামীকে হারিয়ে ফেলেছেন ওই গৃহবধূ। ক্ষীরপাই কাশীগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা বছর বাইশের শ্যামপদ বাগ মাস দেড়েক আগে বিয়ে করেছিলেন কেশপুর ভগবানচকের বছর ঊনিশের অপর্ণা মল্লিককে। নবদম্পতির সুখের সংসারে সবে সবে উভয়কে চেনা-জানা, উভয়ের ভালোমন্দ জানা শুরু হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকদিন হল অপর্ণার শরীর ভালো যাচ্ছিল না। পেটের যন্ত্রণায় কাহিল হচ্ছিলেন। দিন দু’য়েক আগে ক্ষীরপাই গ্রামীণ হাসপাতালে পেটের যন্ত্রণার জন্য ভর্তি করা হয় অপর্ণাকে। খবর দেওয়া হয় বাপের বাড়িতে। ক্ষীরপাই হাসপাতাল(khirpai hospital) থেকে অপর্ণাকে রেফার করা হয় ঘাটাল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। এর মধ্যে মেয়ের শরীর খারাপের কথা শুনে ছুটে এসেছেন অপর্ণার মা অনিমা মল্লিক, মামা কেশপুর পালংপুরের বাসিন্দা বছর ছত্রিশের শ্যামল ভুঁইয়া, মামী বছর একত্রিশের চন্দনা ভুঁইয়া। ঘাটালে সেভাবে অবস্থার উন্নতি হচ্ছিল না বলে অপর্ণাকে ঘাটাল থেকে রেফার করা হয় মেদিনীপুর হাসপাতালে। ঘাটাল থেকে এ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করা হয়। এ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার, দুজন হেল্পার ছাড়া ছিলেন অপর্ণার মামা, মামী, মা এবং শ্যামপদ।
১২ জুলাই রাত বারোটা নাগাদ কেশপুর থানার(Keshpur police station) পঞ্চমী বড়োপুকুরের কাছে লরির সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কায় অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে থাকা ছ’জন মারা যান সঙ্গে সঙ্গে। বেঁচে আছেন অপর্ণা আর অ্যাম্বুলেন্সের চালক(ambulance driver) বছর বাইশের অভিষেক মল্লিক। অ্যাম্বুলেন্সের দুই হেল্পারও স্পট ডেড(spot dead)।
নবদম্পতির নতুন জীবন শুরু হতে না হতেই এই বিপর্যয় মানতে পারছেন না ক্ষীরপাই(khirpai) কাশীগঞ্জের বাসিন্দারা । এলাকায় থমথমে পরিবেশ। শোকে পাথর হয়ে গিয়েছেন আত্মীয় পরিজনরা(relatives)। চোখে যেন জল নেই তাদের। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন অপর্ণা। স্পাইনাল কর্ডে(spinal cord) রয়েছে মারাত্মক ইনজুরি। সুস্থ হলেও স্বাভাবিক হতে পারবেন কিনা সে নিয়ে বিরাট সংশয় রয়েছে।