সৌমেন মিশ্র,ঘাটাল:ওরা কেউ ১০ বছর কেউ ২১বছর আবার কেউ বা ১৭ বছর ধরে কর্ম সূত্রে ঘাটালের বাইরে। ওরা প্রত্যেকেই স্বর্ণকার। কারো নিজের দোকান কেউ বা কর্মী। ওরা কেউই ভুলতে পারেনি নিজেদের দেশের কালীপুজোর আনন্দ ঐতিহ্যকে। মনে পড়ে নিজেদের হাতে কাদা মেখে কালীঠাকুর বানানো,পাড়ার রাস্তা ঘিরে চাঁদাতুলে সেই টাকায় কালীপুজোর রাতে কালীমায়ের পুজো করা বা পাড়ার সবাই মিলে আলোক উৎসবে মেতে ওঠা।
সাগরপুরের রাজু কোলে,সোনাখালীর সঞ্জয় ঘোষ,মনসুকার অনুপ ষাট,ঘাটালের রঞ্জন কামিল্যা বা সাগরপুরের বিশ্বজিৎ দোলইরা কর্মসূত্রে বেশ কয়েক বছর ধরে মহারাষ্ট্রের পুনেতে রয়েছেন। অনেকের সাথে পরিবারও রয়েছে তবুও এই আলোক উৎসবের দিনে মন কেমন করে! মনে পড়ে দেশেরবাড়িতে পাড়ার সবাই মিলে হৈ হট্টগোল, কালীপুজোর রাতে সবাই মিলে চন্দন জেঠুর তৈরী গরম গরম সব্জী খুঁচুড়ির কথা।
ফিরে আসবে না সে সব দিন! তবে ভিনদেশে থেকেও নিজের দেশের সেই ঐতিহ্য ফিরেপেতে পুনেতে থাকা ঘাটালের মানুষেরা একত্রিত হয়েছেন। সবাইমিলে আয়োজন করেছেন সর্বজনীন কালীপুজোর। সেখানে তৈরী করেছেন এক চলতে ঘাটাল। পুজোর কদিন সেই চেনা মেজাজ,সবাইমিলে খাওয়া দাওয়া,বাজি পোড়ানো,নাচ,গান আর মায়ের ভোগে খিঁচুড়ি। না,সেখানে চন্দন জেঠু নেই! তবে সবাইমিলে সবার হাতের স্পর্শে তৈরী গরম খিঁচুড়ি সেখানেও মনে পড়ায় গ্রামের সেই ঐতিহ্য।
প্রায় একদশক ধরে পুনেতে আছেন সাগরপুরের রাজু কোলে। তিনি জানালেন,ঘাটালের স্মৃতি ফিরে পেতেই তাঁদের এই উদ্যোগ। দ্বিতীয় বছরে পড়ল তাঁদের এই পুজো। এই পুজোকে কেন্দ্রকরে সেখানকার সব বাঙালীরা মিলিত হন, দারুনভাবে মজা করেন।