১০০ নয় ২০০ নয় এবার নিয়ে ৬০৬ বছর ধরে এ পুজোয় অন্দরমহলের মহিলারা অন্দরেই থাকেন।অষ্টমীর পুষ্পাঞ্জলীতে যখন সবাই ব্যস্ত থাকে, তখন এই রাজপরিবারের মহিলারা থাকেন অন্দরমহলেই! ঘাটাল মহকুমা ছেড়ে সারা রাজ্যে এমন কড়া শাসনের পুজোর নজির সম্ভবত নাই।
নিয়মের কড়া শাসনের মধ্যেই ৬০৫ বছরের প্রাচীন রীতি মেনে সম্পন্ন হচ্ছে এবার ৬০৬তম বছরের ঐতিহাসিক ঘাটাল মহকুমার দাসপুর ১ নম্বর ব্লকের নাড়াজোল রাজপরিবারের মাতৃ আরাধনা।
এই রাজপরিবারের এক সদস্য সন্দীপ খান জানান,নাড়াজোল রাজপরিবারের পুজোয় অংশ নিতে পারেন না রাজপরিবারের মহিলারা। অষ্টমীর পুষ্পাঞ্জলীতে যখন সবাই ব্যস্ত থাকে, মন চাইলেও তখন এই রাজপরিবারের মহিলাদের থাকতে হয় অন্দরমহলেই। ঐতিহ্যমন্ডিত ঐতিহাসিক এ পুজোয় এভাবেই ব্রাত্য রাজপরিবারের মহিলা সদস্যরা। তবে এই ব্যাতিক্রমী রীতির সুনির্দিষ্ট যুক্তি জানাতে পারেননি রাজ পরিবারের বর্তমান সদস্যরা। এপুজোর নানা বিশেষত্ব আছে। তাদের মধ্যে অন্যতম জয় দুর্গা মায়ের অগ্নিকুণ্ড। সপ্তমী থেকে দশমী পর্যন্ত মায়ের অগ্নিকুণ্ড একইভাবে জ্বলে।
কথিত আছে ৮২০ বঙ্গাব্দে বর্ধমানের রাজার নায়েব উদয়নারায়ন ঘোষ জঙ্গলে শিকারে এসে কুড়িয়ে পেয়েছিলেন মা দুর্গার অষ্টধাতুর মূর্তি। সেই থেকে প্রচলন নাড়াজোল রাজবাড়ি দুর্গোৎসব। পরে রাজবাড়িতে দুর্গামন্দির প্রতিষ্ঠা করেন রাজ পরিবারের ১৩ তম রাজা চুনিলাল খান।
রাজপরিবারের জয় দুর্গা মায়ের অষ্টধাতুর মূর্তিতে রয়েছেন মা উমা একাই। কার্তিক গণেশ লক্ষ্মী সরস্বতী কেউই নেই মায়ের মূর্তির সাথে।
রাজার রাজত্ব কালের নিয়মে ইতিহাসের পাতায় গেলেও আড়ম্বর না থাকলেও সেই পুরাতন প্রথা মেনে দুর্গোৎসবের পুরাতন ঐতিহ্য টিকিয়ে রেখেছেন রাজ পরিবারের বর্তমান সদস্যরা।