সৌমেন মিশ্র, স্থানীয় সংবাদ, ঘাটাল: ঋণ নিয়ে এসএসসির চাকরির জন্য ঘুষ দিয়েছিলেন, চাকরি হয়নি, ঋণের চাপে আত্মহত্যা দাসপুরের যুবকের।বেসরকারি কয়েকটি সংস্থা থেকে চড়া সুদে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে এসএসসির চাকরির জন্য ঘুষ দিয়েছিলেন যুবক। চাকরি হয়নি, টাকা ফেরত চাইতে গিয়ে আক্রমণের মুখে পড়েছিলেন।অন্যদিকে ঋণের টাকা ফেরানোর চাপ। ২০১৭ সাল থেকে কোনওমতে সামলালেও বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষাপট দেখে হতাশায় বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হলেন দাসপুরের যুবক। মৃত যুবকের নাম তপন দোলই(২৮)। বাড়ি দাসপুর থানার বলুড়িতে। কান্নায় ভেঙে পড়ল পরিবার।
দাসপুর থানার বলুড়ি গ্রামের যুবক তপন দোলই ইংরেজিতে এমএ ও বিএড করেছিলেন বলে পরিবারের দাবি। এই যুবক এসএসসিতে পরীক্ষা দেওয়ার পর চাকরির সুপারিশের জন্য মোটা টাকা দিয়েছিলেন কোনও এক দালালকে। নিজের পরিবারের কাছে থাকা টাকা ছাড়াও বেশ কয়েকটি সংস্থা থেকে চড়া সুদে পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে ঘুষ দিয়েছিল ওই দালালকে। চাকরি হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিলেও চাকরি হয়নি। অন্যদিকে সুদে নেওয়া টাকার কিস্তি মেটাতে সমস্যা তৈরি হয়েছিল টিউশন পড়ানো যুবকের।
তপনের দাদা সুকুমার দোলই বলেন, চড়া সুদে টাকা নিয়ে ভাই চাকরির জন্য দিয়েছিল। কাকে দিয়েছিল তার প্রকৃত ঠিকানা আমরাও জানি না।চাকরি হচ্ছে না দেখে টাকা ফেরত আনতে গিয়ে আক্রমণের মুখে পড়েছিল সেই দালালের। কোনওকমে প্রাণ হাতে নিয়ে ফিরেছিল। তারপর সেই টাকার সুদ কিস্তি মেটানো সম্ভব হয়নি। কারণ আমাদের অত রোজগার ছিল না, ভাই সামান্য টিউশন পড়াতো। এরপর সেই চাকরি কোনওভাবেই হবে না বলে বর্তমানে বুঝতে পারে সে। বৃহস্পতিবার রাতে তাই সবাই যখন ঘুমোতে যাচ্ছিলাম তখন সে ‘জঙ্গলসাফ’ নামের বিষ খেয়ে নেয়। রাতেই উদ্ধার করে আমরা চিকিৎসার জন্য ভর্তি করি নার্সিংহোমে। সেখানেই শুক্রবার রাতে মৃত্যু হয়। এই পরিস্থিতিতে ঋণ শোধ করতে বীমার টাকাটা অন্তত যাতে পাওয়া যায়, ডেথ সার্টিফিকেট নিতে হবে, সেজন্য মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য দেহ নিয়ে এসেছিলাম আমরা। ভাইটাকে কোনভাবেই বাঁচাতে পারলাম না।
শনিবার ওই যুবকের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে । মৃত তপনের দাদা সুকুমার দোলই বলেন, আমরা এই ঘটনার কোথাও অভিযোগ করছি না। কারণ এই ধরনের অপরাধীদের ক্ষেত্রে পুলিশ কোনও পদক্ষেপ নেবে বলে আমাদের মনে হয় না।