নিজস্ব সংবাদদাতা, ‘স্থানীয় সংবাদ’, ঘাটাল: খড়গপুর স্টেশনে পরিত্যক্ত অবস্থায় পাঁচ বছরের এক বালক উদ্ধার হয়েছিল। প্রাথমিক ধারণা কেউবা কারা ওকে ছেড়ে চলে গিয়েছিল ইচ্ছে করে। চাইল্ড লাইন উদ্ধার করে তার মা বাবার অনেক সন্ধান করেছে। সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে এক বছরের মাথায় তাকে দত্তক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল প্রশাসন। আর তাকে সন্তান হিসেবে পেতে স্পেন থেকে ছুটে এলেন এক সিঙ্গেল মাদার। স্পেনের বার্সেলোনার এক কোম্পানির ডিরেক্টর, তার নাম চেরি। কয়েক মাস ধরে আন্তর্জাতিক সংস্থা ও প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করে সোমবার দুপুরে বছর ছয়ের নাবালককে নতুন মায়ের হাতে তুলে দিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক খোরশেদ আলী কাদরী। সন্তান হিসেবে সঙ্গে নিয়ে ইতিমধ্যে সরকারি হোমে তিন দিন কাটিয়ে ফেলেছে চেরি। মা বাবা হারা ছ বছরের সোমকে নিয়ে স্পেন উড়ে গেলেন নতুন মা।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২০২৩ এর এপ্রিল মাসে রেলওয়ে মারফত চাইল্ড লাইন জানতে পারে বছর পাঁচেকের এক বালক স্টেশনে পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে। তাকে কেউ বা কারা হয়তো ফেলে গিয়েছে প্রাথমিকভাবে বোঝা গিয়েছিল। সে তার মা-বাবার ঠিকানা বা কোথা থেকে এসেছে সঠিক কিছুই বলতে পারেনি। চাইল্ড লাইন উদ্ধার করে প্রশাসনকে জানায়। প্রশাসনের আধিকারিকরা ওই নাবালকের সমস্ত বর্ণনা ও ছবি দিয়ে বিজ্ঞাপন ও প্রচার করে জানিয়ে দিয়েছিল বিভিন্ন স্থানে। তারপরেও তার কোন পরিবারের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। অবশেষে সেই নাবালক সরকারি হোমে লালিত পালিত হচ্ছিল। যে সরকারি হোমে অনেক বাবা-মা হীন সন্তান প্রতিপালিত হচ্ছে। যেখানে সন্তানদের অনেকের দত্তক নেওয়ার জন্য আবেদন করে থাকে। এবারে আবেদন এসেছিল স্পেন থেকে এক মহিলার। অবিবাহিত চেরি নামের ওই মহিলা স্থানীয় এক কোম্পানির ডিরেক্টর। পরিবারে একটি সন্তান চেয়েছিলেন তিনি। অনলাইনে আবেদন করেছিলেন। সেই আবেদন অনুসারে আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘আফা’ তার সমস্ত ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করে। এরপরে পশ্চিমবঙ্গ প্রশাসনের মারফত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সরকারি হোম এর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করে। তারপরে আরো পদ্ধতি অনুসারে কাগজপত্র ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করে সোমবার দুপুরে মেদিনীপুর শহরে জেলা শাসকের দপ্তরে দত্তক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। যেখানে হোমে থাকা বাবা-মা হীন ছ বছরের সোম কে তুলে দেওয়া হয় চেরির হাতে।