সৌমেন মিশ্র ও শ্রীকান্ত ভুঁইয়া, ‘স্থানীয় সংবাদ’, ঘাটাল: যারা ভোট কর্মী তাদের ভোটের আগেই ভোট দিতে হয়। সেই ইডি ভোট দিতে গিয়ে হতবাক স্কুল শিক্ষক।
[✔‘স্থানীয় সংবাদ’-এর সমস্ত কিছু জানতে এখানে ক্লিক করুন]
ভোটের তালিকায় নেই নাম, তিনি নাকি মৃত। একজন ভোট কর্মীর জীবিত থেকেও মৃত ! ভোটার তালিকা থেকে উধাও নাম, ঘটনার কথা ব্লক প্রশাসনে জানিয়েও মেলেনি সুরাহা, উল্টে ব্লক প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে কোনওমতে ভোট দিতে পারবেন না। কিন্তু আপনি ভোট কর্মী হিসেবে কাজ করতে পারবেন। এমন ঘটনায় হতবাক পরিবার। অন্যদিকে ভোটার তালিকায় জীবিত শিক্ষক মৃতের ঘটনায় ক্ষুব্ধ শিক্ষকের বাবা-মা পাশাপাশি স্ত্রীও।
ঘটনা দাসপুর-২ ব্লকের। ওই ব্লকের জগন্নাথপুর গ্রামের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ জানা, পেশায় প্রাইমারির শিক্ষক। ঝাড়গ্রামের আলামপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক তিনি। এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে সাঁকরাইল ব্লকে থার্ড পোলিং অফিসারের ডিউটি তাঁর। বিশ্বজিৎ জানার বিস্ফোরক দাবি, তিনি আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে একজন ভোটের কর্মী, তিনি সাধারণ মানুষের ভোট নিতে যাবেন, তাই নির্বাচন কমিশনের সমস্ত ট্রেনিং থেকে শুরু করে সমস্ত কাজ সম্পন্ন করে, মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ দাসপুর-২ ব্লকের বিডিও অফিসে গিয়েছিলেন ইডি ভোট দেওয়ার জন্য। ভোট দিতে গিয়ে হতভাগ বিশ্বজিৎ। তিনি দেখলেন ভোটার তালিকায় তার নাম নেই, নামের জায়গায় লেখা ডিলিটেড। ১ বছর হল মারা গেছেন তাঁর ঠাকুমা। ভোটার লিস্টে যেমন তাঁর মৃত ঠাকুমা পদ্মা জানার জায়গায় লেখা ডিলিটেড ঠিক সেভাবেই। কিন্তু জীবিত হয়েও কেন বিশ্বজিৎবাবুর ভোটার তালিকায় নাম নেই? এলাকার BLO থেকে শুরু করে ব্লক স্তরের নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকদের কাছে জানতে চেয়েছেন কেন নাম নেই ভোট কিভাবে দেবেন। তাঁদের সাফ কথা ভোটার তালিকায় নাম যেহেতু নেই ভোটাধিকার নেই। মূলত ভোটার মারা গেলে বা ভোটার তার বাসস্থান পরিবর্তন করলে ভোটার তালিকা থেকে তার নাম বাতিল হয়। প্রাথমিক ভাবে ভোটার তালিকা খুঁজে দেখা গেছে এই বিশ্বজিৎ জানার পিতা নিতাই জানার নাম অন্যত্র স্থানান্তরিত হয়নি। এই যুক্তিতেই বিশ্বজিতের দাবি তাকে কমিশন মৃত ভেবে নাম বাতিল করেছে।
কিন্তু বিশ্বজিৎ জীবিত ব্যক্তি চাকরি করেন, তাঁর কী করে নাম বাতিল পড়লো বিশ্বজিৎ এর দাবি এই প্রশ্ন সমস্ত প্রশাসনিক দপ্তরের আধিকারিকদের করা হলেও, তাকে জানানো হয় আপনি ভোট দিতে পারবেন না, কিন্তু আপনি ভোট কর্মী হিসেবে কাজ করতে পারবেন। পুরো ঘটনায় হতাশ হয়ে পড়েন বিশ্বজিৎ। এ বিষয়ে এলাকার BLO নির্মল মাঝির দাবি, কোনওমতেই এই ভোট দিতে পারবেন না ওই ভোট কর্মী। কারো না কারো ত্রুটির জন্য এই ঘটনা ঘটেছে, উনি আবার আবেদন করলে নতুন করে ভোটার তালিকায় ওনার নাম তোলা হবে।
তবে একজন ভোট কর্মী, নিজের ভোট নিজে দিতে না পারায়, ওই ভোট কর্মীর মধ্যে দেখা দিয়েছে তীব্র ক্ষোভ , উঠছে প্রশাসনিক গাফিলতির অভিযোগ।