ঘাটালের এই বৃদ্ধের দিনকাটে কলকাতার কালীঘাটে ভিক্ষা করে, ফিরতে চান ছেলেদের কাছে নিজের বাড়িতে!

নিজস্ব সংবাদদাতা, ‘স্থানীয় সংবাদ’, ঘাটাল: কলকাতার কালীঘাটের(Kalighat) অলিতে গলিতে ভিক্ষা করে, চায়ের কাপ ধুয়ে ফাইফরমাশ খেটে গলির [‘স্থানীয় সংবাদ’-এর সমস্ত কিছু জানতে এখানে ক্লিক করুন]

মাঝে রাত যাপন করে জীবনের শেষের দিনগুলি চলছে ঘাটালের খড়ারের(Kharar) এক বৃদ্ধ বাবার। দুই ছেলে এক মেয়ে আছে বৃদ্ধ বাবার(father)। ছেলেরা ঘরে ঢুকতে দেয় না আর। ক্ষীণ হয়েছে চোখের দৃষ্টি, বয়েসের ভারে নুয়েছে শরীর। নড়বড়ে দুই পায়েও জোর তেমন আর নেই। তবুও কষ্ট করে পেটের দায়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে ঠেলতে হয় বোঝা হয়ে যাওয়া শরীরটাকে। বয়স সত্তরের দিকে। রোগ জ্বালা এবং ঠিকঠাক পুষ্টি(nutrition) না পাবার কারণে আরও বেশি লাগে বয়সের ভার। এই শেষ বয়সে একটুখানি সহানুভূতি দিয়ে কেউ যদি দুমুঠো মোটা ভাত তুলে দিত, আর কিছু চাইবার ছিল না। কিন্তু ভরা সংসার থাকতেও দুটো ভাত কপালে নেই ঘাটাল থানার খড়ারের এই বৃদ্ধ সুজিত রায়ের। দুমুঠো ভাতের জন্যে সুজিতবাবু কলকাতার(Kolkata) কালীঘাট এলাকার গলিতে বসে ভিক্ষা করেন, খোঁড়া পায়েই লোকের বাড়িতে জল তোলেন, চায়ের দোকানে খিদমত খাটেন। দিনশেষে যখন দুমুঠো মোটা চালের নুনভাত মুখে তোলেন, সে ভাত ভেসে যায় চোখের জলে। বাড়ি ফিরতে চান বৃদ্ধ। থাকতে চান ছেলেদের সংসারে। দুই ছেলে, এক মেয়ে সুজিতবাবুর। বড় ছেলে প্রবীর রায় সোনার দোকানের কর্মচারী(staff), ছোটো ছেলে সমীর রায় বাড়িতেই ইলেকট্রিকের(electric) কাজ করেন। মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। স্ত্রী গত হয়েছেন ১৪ বছর আগে। ঠিক তারপর থেকেই ছেলেদের সংসারে বাড়তি হয়েছেন এই বৃদ্ধ। সামান্য জমিজমা ছিল, সে সব বেচে দেনা শোধ করে স্ত্রীর নামে বাড়ি করেছিলেন সুজিতবাবু। সেই বাড়িতে ছেলেরা ঢুকতে দেয় না বাবাকে। বাবাকে বাবা বলেও ডাকে না ছেলেরা। তার প্রতি ছেলেদের কীসের এত বিতৃষ্ণা জানেন না এই বৃদ্ধ। কলকাতায় এসেছিলেন ২৫ বছর আগে। শরীরের রক্ত জল করা পরিশ্রমের সব টাকায় ছেলে মেয়েদের বড় করেছেন। আজ ছেলেদের ভরা সংসার। সেই সংসারে বাড়তি হয়ে নয়, আদরে ফিরতে চান তিনি। হাউহাউ করে বাচ্চাদের মত কাঁদতে কাঁদতে বললেন, দুমুঠো মোটা ভাত খেয়ে নাতি নাতনীদের সঙ্গে ঘরের কোণায় পড়েই জীবনের বাকি দিনগুলো কাটাতে চান তিনি।

বৃদ্ধের শেষ ইচ্ছে মান্যতা পাক আমরা সকলেই চাই। কিন্তু আমরা চাইলেই কি পারি ওনার ছেলেদের কাছে ফিরিয়ে দিতে? যদি ছেলেরা না চায়? মানবিক উদ্যোগ নিয়ে এর আগেও উপেক্ষিত বৃদ্ধ বৃদ্ধাকে ছেলেদের সংসারে ফিরিয়ে দিয়েছে প্রশাসন। এবারেও আমরা চাই প্রশাসন এই বৃদ্ধকে তার ছেলেদের সংসারে ফিরিয়ে দিক। নাতি নাতনীদের সঙ্গে শেষ জীবনটা জন্মভিটেতে কাটানোর ইচ্ছেটুকু খুব কী অন্যায্য দাবি এই বৃদ্ধের?

 

ঘাটাল মহকুমার সমস্ত আপডেট তে যুক্ত হন আমাদের সাথে!

‘স্থানীয় সংবাদ’ •ঘাটাল •পশ্চিম মেদিনীপুর-৭২১২১২ •ইমেল: ss.ghatal@gmail.com •হোয়াটসঅ্যাপ: 9933998177/9732738015/9932953367/ 9434243732 আমাদের এই নিউজ পোর্টালটি ছাড়াও ‘স্থানীয় সংবাদ’ নামে একটি সংবাদপত্র, MyGhatal মোবাইল অ্যাপ এবং https://www.youtube.com/SthaniyaSambad ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে।