সৌমেন মিশ্র, স্থানীয় সংবাদ, ঘাটাল: সারা রাজ্য জুড়ে যখন তৃণমূল বিজেপি দুই দলের মাঝে এক গুমোট পরিস্থিতি সেই পরিস্থিতিতে নজির সৃষ্টি করল দাসপুর। ব্যাটে বলে খেলায় মিলেমিশে একাকার তৃণমূল বিজেপি। তবে কী ঘাটালের সাংসদ দেবের যে বার্তা ছিল সব দলের সব মানুষের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা দরকার। সে কথায় কাজ দিচ্ছে? ১৪ জানুয়ারি শনিবার রাতে জমজমাট ছিল রাজনগর জীবন-মৃত্যু ক্লাবের আয়োজনে ফ্রিডম কাপ ২০২৩। ৮ দলীয় এই ক্রিকেট খেলাকে নিয়ে ব্যাপক উন্মাদনা ছিল দাসপুরের রাজনগরে। খেলার শুরুতেই বাড়তি উত্তেজনা এবং উৎসাহ। একেবারে নজির সৃষ্টি হল ঘাটাল মহকুমার এই দাসপুরের রাজনগরে। খেলার উদ্বোধন পর্বে বল করতে দেখা গেল তৃণমূল পরিচালিত দাসপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি অনিল দোলইকে আর ব্যাট হাতে একের পর এক বল ডিফেন্সে খেলে দিলেন ঘাটালের বিধায়ক এবং বিজেপি নেতা শীতল কপাট। শুধু তাই নয়, এক মঞ্চে বসা সাথে মাল্যদান খেলার উদ্বোধন মুহূর্তে ফিতে কাটা সব একসাথে। কেন নজির? এই প্রথম দেখা গেল ঘাটালের বিধায়কের সাথে কোনও তৃণমূলের নেতা ক্লাবের কোনও অনুষ্ঠানে এসে ক্রিকেট খেলছেন। আর সে খেলা কয়েক হাজার দর্শক উপভোগ করছেন। তবে ক্লাবের সদস্যরা জানান, তাদের ক্লাবের সব অনুষ্ঠানেই দল ও মত নির্বিশেষে সব কালেই আধিকারিক থেকে বিভিন্ন দলের নেতা বা জনপ্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন। বিষয়টি স্বাভাবিক। আজ ১৫ জানুয়ারি রবিবার পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে না চাইলেও ঘাটালের বিধায়ক শীতল কপাট বলেন, আমরা জনপ্রতিনিধি সাধারণ মানুষের স্বার্থে আমাদের কাজ। অনিলবাবুর ছোঁড়া বলে খেলতে মজাই পেয়েছি। ১০ বছর পর আবার ব্যাট ধরেছিলাম।
ক্লাব সম্পাদক স্বপন দিয়ান জানান, ১২ জানুয়ারি থেকে ৪ দিন ধরে নানান অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে তাদের ক্লাবের বার্ষিক অনুষ্ঠান হয়। ১৪ জানুয়ারি শনিবার রাতে ছিল ৮ দলীয় ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। সে খেলার সূচনা হয় ঘাটালের বিধায়ক শীতল কপাটের ব্যাট আর দাসপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি অনীল দোলই এর বলে। অনিলবাবু দুটি বল করেন দুই বলই নিপুণ হাতে শীতলবাবু প্রতিরক্ষা ভঙ্গিতে খেলেন। তবে রাত প্রায় ৩ টা নাগাদ ৮ দলীয় এই ক্রিকেট টুর্নামেন্টে ফাইনালে ঘাটাল একাদশকে ১৫ রানে হারিয়ে বিজয়ী ট্রফি জিতে নেয় বেলতলা একাদশ। সারা রাজ্য রাজনীতিতে শাসক বিরোধী দলগুলির মধ্যে বিরোধিতা যখন চরমে। নরম পন্থী মনোভাব একেবারে তলানিতে সে পরিস্থিতি রাজনগর জীবন মৃত্যু ক্লাব ক্রিকেটের ময়দানে দুই যুযুধান দলের নেতাদের ব্যাটে বলে এক করে দিল। এ কৃতিত্ব সারা রাজ্যে নজির তো বটেই।