বাবলু মান্না, ‘স্থানীয় সংবাদ’, ঘাটাল: বৃদ্ধ বয়সে মাকে দেখছে না ছেলেরা, এই খবর স্থানীয় সংবাদে প্রকাশিত হতেই নিন্দার ঝড় উঠে। তড়িঘড়ি ছোট ছেলে তার বাড়ির সিঁড়ির নিচে ঠাঁই দেয় বৃদ্ধ মাকে(Mother)।[✔‘স্থানীয় সংবাদ’-এর সমস্ত কিছু জানতে এখানে ক্লিক করুন]
প্রসঙ্গত দাসপুর-২ ব্লকের সোনাখালি(Sonakhali) গ্রামের মাল পরিবারের এই খবর প্রকাশিত হয়েছিল স্থানীয় সংবাদে। অভিযোগ ছিল ৯৩ বছরের বৃদ্ধা নীহারবালা মালের দুই ছেলে(son) নরোত্তম মাল ও উত্তম মাল দেখাশোনা করছে না মায়ের। বৃদ্ধ বয়সেও তিনি একাই নিঃসঙ্গ জীবন যাপন করেছেন। তবে সূত্রের খবর সংবাদ প্রকাশের পর দিনই চক্ষু লজ্জার ভয়ে ছোট ছেলে উত্তম মাল নিজের পাকা বাড়িতে আশ্রয় দেয় মা’কে। আমাদের প্রতিবেদন দেখে শুক্রবার বিকালে বৃদ্ধার সাহায্যের জন্য গিয়েছিল এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। সেখানে গিয়েই তো তাদের চোখ ছানাবড়া। বৃদ্ধাকে কোথায় রাখা হয়েছে জানেন। ছেলের অট্টালিকার কোন রুমে তার জায়গা হয়নি, তাকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে পাকা বাড়ির সিঁড়ির তলায়। সম্ভবত ১০ ফুট বাই ৬ ফুটের একটি সিঁড়ি ঘরের তলায় কোনরকমে মাথা গুঁজে রয়েছেন তিনি। কী অমানবিক ঘটনা তাই না? এই কনকনে ঠাণ্ডার মধ্যে আমি আপনি যখন রুমের মধ্যে খাটের উপর কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে থাকি ঠিক সেই সময় সিঁড়ির তলায় একটি ফোমের চাদরের উপর ঠাণ্ডার মধ্যে দিবারাত্র কাটাচ্ছেন ৯৩ বছরের ওই বৃদ্ধ মা। বিষয়টি শুধু তাদেরই খারাপ লাগেনি ! দেখলে আপনাদেরও খারাপ লাগারই কথা। মায়ের প্রতি সন্তানদের এরকম অমানবিক আচরণ মোটেও কাম্য নয়। সংস্থার তরফে ওই বৃদ্ধাকে এক মাসের রেশন ও শীতবস্ত্র দেওয়া হয়েছে। এই করুন পরিণীতির খবর পেয়ে আজ ৬ জানুয়ারি শনিবার বেলা বারোটা নাগাদ প্রশাসনিক আধিকারিক ও স্থানীয় পঞ্চায়েতের নেতৃত্বরা তার দুই ছেলের বাড়িতে যান। গোছাতি গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ প্রধান প্রশান্ত মাল(গোছাতি জিপি),দাসপুর-২ বিডিও(BDO) প্রবীরকুমার সিট, বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ ভবানন্দ মাজি, সাহাচক গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান প্রসেনজিৎ দিণ্ডা, পঞ্চায়েত সদস্য দিব্যেন্দু প্রামানিক, শংকর চক্রবর্তী সমাজসেবী ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সদস্য সৌমিত্র সিংহ রায়। দুই পরিবারের সঙ্গে কথা বলে বৃদ্ধাকে তাদের বাড়ির রুমের মধ্যে রাখার অনুরোধ জানানো হয়। শেষমেষ বৃদ্ধা শাশুড়িকে তলা থেকে সরিয়ে ছোট বৌমার একটি রুমের মধ্যে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। দুই ছেলেকে মায়ের দায়িত্ব নিতে হবে একথা স্পষ্ট জানিয়ে দেন প্রশাসনিক আধিকারিক সহ উপস্থিত ব্যক্তিবর্গ। নিজেদের পারিবারিক সমস্যা মিটিয়ে দুই ছেলেই মায়ের দায়িত্ব নিতে স্বীকার করে।