তৃপ্তি পাল কর্মকার, ‘স্থানীয় সংবাদ’, ঘাটাল: মুখে বেঁধা তীর নিয়েই কেটে গেল দুদিন, আহত জার্মান শেফার্ড যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে:কুলুপ এঁটেছে প্রশাসন থেকে পশুপ্রমী সংগঠন। হয় আমাদের মারুন,নাহয় কুকুরকে মারুন। প্রশাসনের কাছে এমনটাই আবেদন দাসপুর থানার কাঁটাদরজা এলাকার মানুষের। গ্রামবাসীদের বহু আবেদন নিবেদনেও টনক নড়েনি প্রশাসনের। দাসপুর থানার কাঁটাদরজা এলাকার মানুষ সিঁটিয়ে রয়েছেন এক বিদেশী কুকুরের ভয়ে। কুকুরটি জার্মান শেফার্ড প্রজাতির। বেশ কিছুদিন ধরে কেউ তাকে ছেড়ে দিয়ে গেছে এই কাঁটাদরজা এলাকায়। এই কুকুর সাধারণত বাড়িতে কেউ পোষেন না। বিশেষ ট্রেনিং দিয়ে এই জার্মান শেফার্ড কুকুরকে পুলিশ গোয়েন্দা তল্লাশি ও বিশেষ তদন্তের কাজে লাগানো হয়। খাবার মেনুতে থাকে বিশেষ ভাবে রান্না করা মাংস ও অন্যান্য ডগফুড। দিতে হয় উপযুক্ত ট্রেনিংও।
রাস্তার পথ কুকুরদের সঙ্গে এই কুকুরের স্বভাব চরিত্র কিছুতেই খাপ খায় না। এই কুকুরটিকেও কেউ পুষে আর যত্নআত্তি করতে পারেননি, তাই ছেড়ে দিয়ে গিয়েছেন এই কাঁটাদরজা এলাকায়। জার্মান শেফার্ডটি দিন দশেকের বেশি রয়েছে কাঁটাদরজা গ্রামে। আশ্রয় নিয়েছিল এক মাংস দোকানের কাছে। খেতে পায়নি কদিন ধরে। প্রথমটায় এই জার্মান শেফার্ডটি এলাকায় পথকুকুরদের দিকে তেড়ে যাচ্ছিল, তাদের কামড়ে দিচ্ছিল। তারপর দিনের পর দিন না খেতে পেয়ে তার মেজাজ বিগড়ে যায়। মাংস দোকানের ঝাঁট মাংস খাবার অভ্যেস তার নেই। খিদের জ্বালায় কেউ সামনে এসে একটু লাগামো করলেই ছুটে গিয়ে তাকে কামড়ে দিয়েছে কুকুরটি। তারপর থেকেই বেশ কয়েকজনকে কামড়েছে কুকুরটি। খাবলে মাংস তুলে নিয়েছে। এরপর এলাকায় আতঙ্কের পরিবেশ। বাইরে বেরোতেই ভয় পাচ্ছেন বাসিন্দারা। এর মধ্যেই কেউ কুকুরটিকে মেরে ফেলার জন্য তীর ছুঁড়েছে। সেই তীর মুখে বিঁধেছে তার। যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে কুকুরটি। আবার নতুন করে মানুষকে কামড়াতে শুরু করেছে।
ঘাটাল মহকুমার বিশিষ্ট পাথর ব্যবসায়ী সুকুমার মাইতি নিজে ডগ লাভার। তিনি বলেন কুকুরটির এই অবস্থা দেখে প্রশাসন নীরব কেন? প্রশাসন তো চাইলেই এর ওর ঘাড়ে দোষ না চাপিয়ে কুকুরটিকে উদ্ধার করতে পারে! সত্যিই কতটা দোষ এই অবলা প্রানীটির? এই অবহেলা সত্যিই কি ওর পাওনা ছিল? এই তীরবিদ্ধ অবস্থাতে মৃত্যুই কী ওর ভবিতব্য? কে দেবে এর উত্তর? এর পরেও কি নীরব থাকা উচিত প্রশাসনের ?