পাপিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়: ঘাটালের মহিলা পুরস্কৃত হলেন কলকাতায়। না, কোনও প্রবন্ধ বা কবিতা লিখে নয়, দিদি নম্বর ওয়ানেও নয়। এলাকা থেকে চোলাই মদ তুলে ১৯ অক্টোবর কলকাতায় বিশেষ সম্মানিত হলেন ঘাটাল থানার গোপমহলের দুর্গা মালিক। সত্যিই এযেন ঘাটালের জীবন্ত দুর্গা। না দশ হাতে নয়, দুই হাতেই চোলাই মদের কারবার বন্ধ করার মত দুঃসাহসিক কাজ করে সমগ্র পশ্চিমবঙ্গে আজ সে অনন্যা। আর এই কাজের জন্যই ‘এই সময়’ পত্রিকা পক্ষ থেকে তিনি পেলেন লড়াকুর সম্মান। কলকাতার জিডি বিড়লা সভাঘর থেকে ১৯ অক্টোবর শনিবার সন্ধ্যায় তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয় স্বয়ংসিদ্ধ্যার পুরস্কার। ঘাটালের গোপমহল গ্রামের বিদ্যাসাগর পল্লির তথাকথিত সমাজের চোখে এক অশিক্ষিত মহিলা দুর্গা মালিক। তিনি কয়েকজন মহিলাদের সঙ্গে নিয়ে তৈরি করেছেন প্রমীলা বাহিনী। ওই বাহিনীদের সঙ্গে নিয়ে বিগত এক দশকের বেশি সময় ধরে আন্দোলন চালিয়ে গোপমহল গ্রামের চোলাই মদ তৈরির কারবার এবং বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন। একজন মহিলা হয়ে সমাজে যেভাবে তিনি প্রতিবাদীর মূর্ত প্রতীক হয়ে উঠেছেন তারই প্রাপ্য সম্মান পেলেন। ওই পত্রিকার পক্ষ থেকে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন ক্ষেত্রে লড়াকু দশ জন মহিলাদের স্বয়ংসিদ্ধ্যা পুরস্কার দেওয়া হয়। তারমধ্যে দুর্গা মালিক একজন। এই সময় গ্রুপের মতে দুর্গা মালিক যে সাহসিকতার সাথে কিছু মহিলাদের সঙ্গে নিয়ে গোপমহল গ্রামে যেভাবে চোলাই মদের ভাটি ভেঙে সব কিছু তছনছ করে দিয়েছে তা সত্যিই স্যালুট করার মতো। শুধু মদের ভাটি ভাঙা নয়, মনোহরপুর সহ আরো পাশাপাশি গ্রামে চোলাই মদ বিক্রি করা পর্যন্ত বন্ধ করে দেওয়ার কাজে এখনও তারা সামিল। দুর্গা মালিকের কথায় প্রশাসনের সাহায্য পেলে মহিলাদের নিয়ে তাঁরা আরও কাজ করতে চান। দুর্গাদেবীর এই সম্মান ও শুধু তার নয়, মনোহরপুর গ্রাম সহ সমস্ত ঘাটালবাসীর সম্মান। দুর্গাদেবীর ওই সম্মানে খুশি ওই গ্রামের বাসিন্দারাও। কুসংস্কার বিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত তথা ওই গ্রামের বাসিন্দা দেবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমরা দীর্ঘ দিন থেকে দুর্গাদেবীর মদ বিরোধী আন্দোলন দেখে আসছি। সত্যিই তিনি এই সম্মান পাওয়ার যোগ্য।