“আমি এই মর্মের ঘোষণা করছি…”ফেসবুকে পোস্ট করে নিজের নিজের অজ্ঞতা কে প্রমাণ করছেন না তো?

সুদীপ্ত শেঠ, স্থানীয় সংবাদ: আমি ইচ্ছে করলেই আপনার ফেসবুক উড়িয়ে দিতে পারেন! চাইলে, আপনার প্রোফাইলে ছবি নাও লাগাতে পারেন, বাতিল করতে পারেন বন্ধুর অনুরোধ। ইচ্ছে হলে পোস্ট করতে পারেন নেচে-গেয়ে! ভাবছেন এ আর নতুন কি? এগুলোতো করেই থাকেন। আসলে এই অনুমতি গুলো ফেসবুক আপনাকে দিয়েছে বলেই আপনি তা করতে পারছেন! না হলে সেটা সম্ভবত না আপনার পক্ষে! যখন একাউন্ট খুলেছিলে, তখন আপনার ইমেল আইডি, ফোন নাম্বার, আপনার ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহারের অনুমতি মেটা কর্তৃপক্ষকে আগেই দিয়ে রেখেছে। আসলে ওই সময় অনুমতি না দিলে আপনার ফেসবুক প্রোফাইলটি তৈরি করতে পারতেন না। এখন ফেসবুকে পোস্ট করে Meta কর্তৃপক্ষকে আপনি যে বার্তা দিচ্ছেন, আসলে সেটা অর্থহীন। একপ্রকার হুজুকে পড়ে আপনি ওই বার্তা আপনার প্রোফাইলে পোস্ট করছে। যেহেতু বাংলা ভাষায় লেখা, এবং বার্তাটি দূরদর্শনে সম্প্রচার হয়েছে, এমনকি নিজে লিখতে হবে না, কপি করেই পোস্ট করা যাবে, তাই সহজেই অনেকেই এমন বার্তা নিজের প্রোফাইলে দিয়ে রাখছেন। হয়তো ভাবছে যদি পোস্ট করে রাখি, তাহলে ক্ষতি তো নেই!
ক্ষতি আছে! কারণ আপনি আপনার যুক্তিবোধকে কাজে লাগাচ্ছেন না। আর এটা আপনার অভ্যাসে পরিণত হতে পারে। আসলে আপনি যার বার্তাটি কপি করছেন তিনি নিজেও জানেন না এটি পোস্ট করে আদতে কোন লাভ হবে না। টেলিভিশনে সম্প্রচারিত হয়েছে শুনে, সহজেই আপনার মস্তিষ্ক তা বিশ্বাস করছে। সাথে আপনার প্রোফাইলে থাকা বন্ধুদের(যাদের আপনি অনুকরণ করেন) একই রকম পোস্ট দেখে আপনি সহজেই তা বিশ্বাস করে নিচ্ছেন। আপনাকে বুঝতে হবে, ফেসবুকে একাউন্ট খোলার সাথে সাথে আপনি ওই ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে, আপনার ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহারের অনুমতি দিয়ে রেখেছেন। ফেসবুক তাদের ব্যবসায়িক থাকতে আপনার মোবাইলের ডাটা, আপনার ভৌগোলিক অবস্থান, আপনার ইন্টারনেট ফুটপ্রিন্ট প্রতি মুহূর্তে সংগ্রহ করে চলেছে। এর ফলে আপনার ফেসবুকে আমি যে বিষয়গুলি বারবার দেখে থাকেন সেই বিষয়গুলি আপনার আগ্রহ বিচার করে ফেসবুক আপনার কাছে তুলে ধরে। তবে এখনো অব্দি ফেসবুকে এই কার্যকলাপে আইনত অসংগতি ধরা পড়েনি। আর এর ফলে আপনার উদ্বিগ্নতার কোন কারণ নেই। আপনার ছবি ব্যক্তিগত তথ্য যেগুলি আপনি ফেসবুকে প্রতিনিয়ত পোস্ট করে থাকেন সেগুলি আপনার পরিচিত কেউ বা অপরিচিত হলেও যদি মিথ্যে ভাবে উপস্থাপন করে থাকে ভারতীয় আইনে (IT Act.,2000 & 1872)আপনি তার প্রতি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন। যদি বুঝতে পারেন কোন ব্যক্তি আপনার ছবি বা তথ্য বিকৃত করে আপনাকে বিব্রত করার চেষ্টা করছে, তাহলে সরাসরি আইনের দ্বারস্থ হন। সাম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট স্বীকার করেছেন যে কোন নথি বিকৃত/প্রতিলিপি তৈরি করা সম্ভব। তাই আগামী দিনে এই ধরনের সমস্যায় পড়লে আপনাকে সরাসরি আইনের সাহায্য নিতে হবে। ফেসবুকে Meta কর্তৃপক্ষকে বার্তা দিয়ে আপনি নিজের বিচারক বুদ্ধির উপর প্রশ্ন তুলছেন! এভাবে বার্তা দিয়ে ভবিষ্যতে আইনি কোনরকম সহায়তা আপনি পাবেন না। তর্কের খাতিরে, যদি ধরে নেয়া হয় Meta কর্তৃপক্ষ ওই তথ্য(আপনি যেগুলি প্রোফাইলে পোস্ট করছেন) ভবিষ্যতে বিকৃত করে পরিবেশন করে তা আপনার অনুমতি নিয়েই করা হয়েছে। আপনার ফেসবুকের দেওয়ালে যেটি পোস্ট করছেন। সেটা আইনের চোখে প্রকৃতপক্ষে অর্থহীন।

ঘাটাল মহকুমার সমস্ত আপডেট তে যুক্ত হন আমাদের সাথে!