সৌমি নাগ দত্ত ও সুইটি রায়, স্থানীয় সংবাদ, ঘাটাল: বেশ কিছুদিন ধরে সামান্য গা হাত পায়ের ব্যাথা, গাঁটের যন্ত্রণা, হালকা জ্বর জ্বর ভাব, গায়ে ছোটো ছোটো এলার্জির মতো র্যাশ চুলকুনি ও জ্বালাপোড়া – এই সামান্য কিছু উপসর্গই কেড়ে নিল তরতাজা বছর আঠেরোর শ্রেয়ার জীবন। শ্রেয়া মাইতির বাড়ি দাসপুর ২ ব্লকের আলিপুরে। বাবার নাম কাঞ্চন মাইতি। বাবা পেশায় স্বর্ণশিল্পী। মা ময়না মাইতি,গৃহবধূ।খেপুত উচ্চবিদ্যালয় থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করে বর্তমানে সে চাঁইপাট কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিল। গত দুই তিন মাস ধরেই সে জ্বর, গাঁটের ব্যাথা ও এলার্জির সমস্যাতে ভুগছিল। সমস্যা বাড়তে গতমাসে তাকে ঘাটালের একটি নার্সিং হোমে কিছুদিন ভর্তিও থাকতে হয়েছিল। নার্সিং হোম থেকে ফিরে বেশ কিছুদিন ভালো থাকলেও গত ১৫ই ফেব্রুয়ারি আবার একইরকমের উপসর্গ দেখা যেতে শুরু করে। অবস্থার অবনতি হওয়াই তাকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই গত ২৪শে ফেব্রুরারি রাতে মৃত্যু হয় তার। মৃত্যুর বেশ কিছুক্ষণ আগে অব্দি তার রোগনির্ণয় সম্ভব হয়নি। ডাক্তাররা জানাচ্ছেন ADULT ONSET STILL’S DISEASE নামের একটি বিরল রোগে আক্রান্ত ছিল সে৷ সারা ভারতবর্ষে মাত্র ৪-৫ জনকেই এই রোগে আক্রান্ত হতে দেখা গেছে আর আক্রান্ত কাওকেই বাঁচানো সম্ভব হয়নি। এই রোগের উপসর্গ এতই সামান্য যে প্রাথমিকভাবে এই রোগ নির্ণয় করা যায় না বললেই চলে। আর পরে যখন রোগনির্ণয় সম্ভব হয় তখন রোগীর অবস্থার এতটাই অবনতি হয়ে যায় যে আর কিছু করার থাকে না। সিস্টেমিক অটোইনফ্ল্যামেটরি এই রোগের প্রথম অবস্থাতে সাধারণত শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যাথা, জ্বর, সারা গায়ে র্যাশ বা ফুসকুড়ি বেরোনো ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যায়। তবে কিছুদিনের মধ্যেই দ্রুত অবস্থার অবনতি ঘটে লিভার বেড়ে যাওয়া,ফুসফুস ও হার্টে জল জমে যাওয়া ও রক্তে নিউট্রোফিল প্রধান শ্বেত রক্তকণিকার অস্বাভাবিক পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়া এইসব উপসর্গ দেখা যায়। সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয় ও সঠিক চিকিৎসা না হলে রোগীর সারাজীবনের জন্য প্যারালাইসিস এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।