নিজস্ব প্রতিনিধি, ‘স্থানীয় সংবাদ’, ঘাটাল: বাড়ির মধ্যে হঠাৎ হঠাৎ দাউ দাউ করে জ্বলে উঠছে আগুন, শূন্যে ভাসছে পেঁয়াজ?
[✔‘স্থানীয় সংবাদ’-এর সমস্ত কিছু জানতে এখানে ক্লিক করুন]
ভয়ে সিঁটিয়ে রয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। সেই খবর প্রকাশ পেতেই সে আগুন এবং তার উৎসের খোঁজে রবিবার রাতে এবং আজ সোমবারের সকাল থেকেই দফায় দফায় দাসপুর(Daspur) থানার উত্তর গোবিন্দনগরের দোলই পাড়ার নিরঞ্জন দোলই এর বাড়ি ঘুরে দেখলেন পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ(West Bengal Science Forum) এবং যুক্তিবাদী সংস্থার(Rational organization) দুই প্রতিনিধি দল। উভয় দলের স্পষ্ট বক্তব্য ঘটনা অলৌকিক নয়, একেবারেই লৌকিক বলা চলে ম্যান মেড। এবার প্রশাসনের দায়িত্ব ঘটনার পিছনে যারা রয়েছেন সেইসব কলাকুশলীদের প্রকাশ্যে এনে শাস্তির ব্যবস্থা করা। কারণ এই ঘটনা আর পরিবার বা বাড়ির চার দেওয়ালের মধ্যে আবদ্ধ নেই। এমন ইচ্ছাকৃত মিথ্যেগুলোর দ্বারা আধুনিক সমাজ ও সভ্যতা প্রভাবিত হতে পারে।
জানা যাচ্ছে, শনিবার থেকে এই পরিবার এক অদ্ভুত পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলেন। তাঁরা তাঁদের চোখের সামনে হঠাৎ হঠাৎ আগুন জ্বলে উঠতে দেখছিলেন। তাদের জামাকাপড়ে, কাগজের স্তুপে, বেডশীটে হঠাৎ হঠাৎই আগুন জ্বলে উঠছে। পাকা বাড়ির একতলা থেকে দোতলা সব জায়গাতেই আগুন জ্বলে উঠছিল মাঝে মাঝেই। এলাকার মানুষ অনেকেই বিশ্বাস করেছেন এ এক ভৌতিক রহস্য। অনেকে আবার ভৌতিক কর্মকাণ্ডে বিশ্বাস করেননি। ২০২৩ সালে যেখানে শিক্ষার আলো পৌঁছে গিয়েছে সমাজের সর্বস্তরে প্রতিটি মানুষের কাছে, সেখানে দাঁড়িয়ে অনেকেই বলেছেন, যুক্তিবাদী টিমের তরফে এই রহস্য উন্মোচন হোক।
বিগত বেশ কিছু ভৌতিক কেসের রহস্য উন্মোচন করতে গিয়ে দেখা গিয়েছে, পরিবারের তরফেই কেউ না কেউ এই কারসাজির সঙ্গে যুক্ত। কোনও না কোনও ইনটেনশান(Intention) থাকে এর মধ্যে। হয় খবরের শিরোনামে আসার ইচ্ছে, না হয় কাউকে ভয় দেখিয়ে বাড়ি ছাড়া করার উদ্দেশ্যে এই সব করা হয়। অনেকক্ষেত্রে আবার নিছকই মজার উদ্দেশ্যে এই সব ভৌতিক কারসাজি করানো হয়। তবে যে বা যিনি করান এইসব তাকে সায়েন্সের(Science) কিছু কারিকুরি জানতে হয়, কিনে আনতে হয় কিছু রাসায়নিক, তবেই ঘটানো যায় এই ভৌতিক কারসাজি। পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেটের(Potassium permanganate) সঙ্গে গ্লিসারিনের(Glycerin) সংস্পর্শে আগুন(Fire) জ্বলে, মেটালিকসোডিয়ামকে বাতাসের সংস্পর্শে রাখলে কিছুক্ষণ পর আগুন জ্বলে ওঠে, এছাড়াও আরও রাসায়নিক রয়েছে যা দিয়ে আগুন জ্বালানো যায়। বিগত কিছু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, যিনি এইসব করান, তিনিই ওঝা ডাকতে চলে গিয়েছেন, অন্যান্যদের সঙ্গে মিশে গিয়ে ভৌতিক গল্প হাঁ করে গিলছেন, যাতে কেউ ঘুনাক্ষরে টেরটি না পায়।
ভূত যদি কিছু থাকে তা ছিল এই সর্ষের মধ্যেই। যুক্তিবাদী টিমের তরফে দেবব্রত বন্দোপাধ্যায় এবং পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের তরফে যাতব পাত্রও এই ঘটনার খোলসা করেছেন। এবং তাঁদের স্পষ্ট বক্তব্য ইচ্ছেকৃত এবং বিশেষ উদ্দেশ্যে এই কাজ।