শুভ চক্রবর্তী, স্থানীয় সংবাদ, ঘাটাল:-বিয়ে হোক বা অন্নপ্রাশন,জন্মদিন কিম্বা উপনয়ণ অনুষ্ঠানের স্মরণীয় মুহূর্ত গুলোর ফ্রেমবন্দি করে রাখতে মানুষ চিরকালই ভীষণ আগ্রহী।ফলে যেকোনো অনুষ্ঠানেই স্বাভাবিক ভাবেই ডাক পড়তো ফটোগ্রাফারদের।দামি দামি ক্যামেরা, ড্রোন, গিম্বেল নিয়ে আগে চুটিয়ে কাজ করেছেন ফটোগ্রাফাররা। অনুষ্ঠানের সিজিনে একাধিক কন্ট্রাক্টে কাজের চাপে নাওয়া-খাওয়া উড়তো মাথায় এই পেশায় যুক্ত কর্মীদের । কিন্তু গেল বছর করোনা পরিস্থিতির পর থেকেই অন্ধকার নেমে এসেছে ফটোগ্রাফারদের জীবনে।২০২০ তে দীর্ঘ লকডাউন এর বেড়া জাল অতিক্রম করে যখন একটু স্বাভাবিক পথে ফিরেছিল ফটোগ্রাফাররা। ঠিক তখনই আবার ফটোগ্রাফারদের উপর নেমে এসেছে খাড়ার ঘা। ঘাড়ে চেপে বসেছে দ্বিতীয় লকডাউন। একদিকে সামাজিক অনুষ্ঠানে বাধা, অন্যদিকে অল্প সংখ্যক লোক নিয়ে কার্যত নমো নমো করেই অনুষ্ঠান সারছেন উদ্যোক্তারা। ফলে আর ডাক পাননা ক্যামেরা ম্যানরা। ঘাটালের এক স্টুডিওর মালিক জয়ন্ত সামন্ত বলেন গত বছর থেকে আমাদের সমস্যায় পড়তে হয়েছিল আশা করেছিলাম এই বছর হয়তো কিছুটা সুরাহা হবে কিন্তু এ বছরও একই পরিস্থিতি। ক্যামেরা এবং ভিডিওগ্রাফি করতে যে পরিমাণ বাজেট অনুষ্ঠান বাড়িতে হতো আগে এখন সেই বাজেটেই পুরো অনুষ্ঠানটাই সারছেন অনুষ্ঠান বাড়ির কর্তারা। ফলে আমাদের কপালে শনি।
অন্যদিকে প্রশাসনিক বিধিনিষেধের জেরে তেমন ভাবে বাইরে বেরোতেও চাইছে না অনেকেই । তাই শখের ছবি তোলা কিংবা অভিনয় বা মডেলিংয়ের জন্য পোর্টফলিও বানাতে যে সমস্ত যুবক-যুবতী আগ্রহী ছিল তারাও আর সেভাবে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। ফলে আউটডোর শ্যুট ও বন্ধ হওয়াতে কপাল মন্দ মডেলিং ফটোগ্রাফারদেরও। সংসার চালাতে নাজেহাল হতে হচ্ছে ফটোগ্রাফি পেশার সঙ্গে যুক্ত বহু মানুষদের।স্থানীয় এক ফটোগ্রাফার বলেন কাজ বন্ধ তাই ক্যামেরা, স্ট্যান্ড কিংবা ড্রোন বাক্সে বন্দি দীর্ঘদিন। অব্যবহৃত হওয়ায় জমছে ধূলোর আস্তরণ, মাঝেই মুছে তাকে ফের বাক্স বন্দি করে রাখতে রাখি আর অপেক্ষায় থাকি।
প্রসঙ্গত,এই পরিস্থিতিতে সংসার চালাতে অসুবিধায় পড়ে পেটের দায়ে পেশা ছেড়ে ফটোগ্রাফার রা অন্য পেশায় যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
কারো অবস্থা আরো করুণ।ঋণ নিয়ে ব্যবসা শুরু করেছিলেন কিন্তু মন্দার জেরে মাসিক কিস্তি অনিয়মিত হয়ে পড়ায় নিত্য তাগিদ দিচ্ছে ব্যাঙ্ক কিংবা লোন সংস্থা গুলিও।মাসিক কিস্তি কিন্তু দিতে প্রাণ ওষ্ঠাগত।
ক্যমেরার ভিউফাইন্ডারে থাকা চোখ আজ অধীর অপেক্ষায় তাকিয়ে সুদিনের দিকে।