সুইটি রায়👆স্থানীয় সংবাদ•ঘাটাল:অতীতকাল থেকেই আমাদের এই বাংলা ছিল সারা দেশের গর্ব। সাহিত্য, সংস্কৃতি এবং রাজনীতি সবদিক থেকেই অন্যান্য রাজ্যের অনুকরণীয় ছিল বাংলা। দিন বদলের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয়েছে অনেককিছুই। তবে এই পরিবর্তনের বাংলায় সংস্কৃতির সাথে রাজনীতির অধঃপতনও বেশ চোখে পড়ার মতো। রাজনীতির ভরা আসরে আজ বাঙালির সংস্কৃতি নিয়ে চলছে তীব্র টানাপোড়েন, গুণ্ডাবাজি আর তোলাবাজি। সম্প্রতি চলা বিধানসভা ভোট এই অবস্থার জীবন্ত প্রমাণ বহন করছে। এ যেন রবীন্দ্রনাথ, বিদ্যাসাগরের বাংলা নয়।
কিছুদিন আগে পর্যন্তও পাশের রাজ্য বিহার ছিল রাজনীতির উত্তপ্ত ক্ষেত্র। এখন সেই জায়গা নিয়েছে আমাদের বাংলা। বিধানসভা ভোটকে কেন্দ্র করে রক্তগঙ্গা বইছে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায়। বঙ্গ রাজনীতি এখন বেশ ভালোই উত্তপ্ত। আর সেই উত্তাপে পুড়ে মরছে রাজ্যের সাধারণ মানুষ। তার সাথে মরার ওপর খাড়ার ঘা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের ভুলভাল এবং বেপরোয়া কিছু মন্তব্য। যার জন্য মুখিয়ে থাকে বিরোধী পক্ষ। আর কোনও একটা ইস্যু পেলেই বেধে যায় তুলকালাম। বাড়তে থাকে রাজনৈতিক তর্জা। এবার রাজনীতির মঞ্চথেকে প্রায় প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল কলতলার ঝগড়ার মতো ব্যক্তিগত আক্রমণেই বেশি মনঃসংযোগ করেছিলেন। যেটা কিছু মানুষ তারিয়ে-তারিয়ে উপভোগ করলেও বেশির ভাগেরই ভালো লাগেনি। রাজনৈতিক সচেতন মানুষজন বরং বিরক্ত বোধই করেছেন।
কারণ, কোনও নেতা বা নেত্রী তাঁর জনসভার মঞ্চ থেকে অন্যজনের প্রতি কুৎসিত মন্তব্য ছুঁড়ে দেবেন এটাও কোনওভাবেই কাম্য নয়। কেউ মাঠ ভর্তি লোকের সামনে কাউকে ‘হোঁদল কুৎকুৎ’, ‘কিম্ভুতকিমাকার’ ইত্যাদি বলে বিদ্রুপ করেন আবার কখনও কেউ অন্যজনকে ‘বেগম’ বলে বিদ্রুপ করেন। সত্যি বোঝা দায় এগুলো দলের প্রচার নাকি মাছের বাজার। নীতি ও মূল্যবোধের ধার ধারে না কেউই। তার সাথে এবারের ভোটের চমক হিসেবে রয়েছে প্রায় গোটা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির রাজনীতিতে যোগদান। যা রীতিমতো হাস্যকর। রুপোলি পর্দার কান্নাহাসি, সুখদুঃখের অভিনয়ের সক্ষমতা কি কখনও পারবে রাজ্যের জনগণের সুখদুঃখের দায়িত্ব নিতে? বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা প্রায় অসম্ভব।
এখন বাংলার সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক মূল্যবোধের পুনরুদ্ধারের জন্য সঠিক দলনেতা প্রয়োজন। তিনি যে দলেরই হোন না কেন, তাঁর মতাদর্শ যাই হোক না কেন অন্ততপক্ষে অন্যের প্রতি সম্মান এবং সর্বোপরি জনগণের জন্য সহানুভূতি যেন তাঁর সম্পদ হয়।
👆 আমাদের ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউব চ্যানেলটি লাইক করুন