প্রায় ইচ্ছে করেই গাড়ির চাকায় কুকুরকে পিসে দিয়ে দ্রুতবেগে চলে যাওয়া ডিসিএমকে আটকে চালককে সবক দিল দাসপুর ১৪ নং দুধকোমড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের মাগুড়িয়া গ্রামের জনা কয়েক যুবক। রাস্তায় কুকুর বা অন্য কোনো মালিকানাহীন প্রাণীর মরে পড়ে থাকা গ্রাম বাংলায় বা শহরে নতুন কোনো ঘটনা নয়। অনেক ক্ষেত্রেই রাস্তায় কুকুর বা বিড়াল জাতীয় প্রাণী দেখে গাড়ির চালক তাদের বাঁচাবার চেষ্টা না করেই চাকার তলায় পিসে দিয়ে চলে যায়। এর জেরেই প্রতি বছর হাজার হাজার পশু পাখি প্রাণ হারায়। কিন্তু আমরা একটু সচেতন হলেই গতিবেগ সামান্য কমিয়ে বাঁচাতে পারি ওই হাজার হাজার প্রাণ। জীব জগতে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে, বাস্তু তন্ত্রের ভারসাম্য বজায় রেখে নিজেদের অস্তিত্বের তাগিদেই আমাদের বাঁচিয়ে রাখা উচিত এই সব প্রাণীদের।
৯ ফেব্রুয়ারি রাতে দাসপুরের মাগুড়িয়ার রাস্তায় কয়েকটি কুকুর মিলে খেলা করছিল। রাস্তার পাশেই বিয়েবাড়িতে আমন্ত্রিত ছিল ওই গ্রামেরই সমিত,শোভন,সঞ্জয়েরা। সমিত মাইতি বলেন,হঠাৎ দেখলাম উল্টো দিক থেকে একটা ডিসিএম গতিবেগ না কমিয়েই প্রায় কুকুরগুলোর উপর দিয়ে চলেগেল। সব কুকুরগুলো ছিটকে, লাফিয়ে প্রাণ বাঁচাতে সক্ষম হলেও ঘটনাস্থলেই একটি কুকুরের মৃত্যু ঘটে। এটা আমাদের ক্ষেত্রে ঘটলে আমরা কত কিছুই না করতাম,এই ভেবে আমরা কিছুটা দূরে গিয়ে ওই ডিসিএমটিকে দাঁড় করাই। চালককে নামিয়ে তার এই হটকারিতার কারণ জানতে চাইলে চালক জানায়, সে খুব তাড়াহুড়োর মধ্যে ছিল। আর তাছাড়া একটা কুকুরই তো মরেছে! শোভন মাইতি জানান,তাঁরা ওই চালকে বোঝান কেন রাস্তার একটা পিঁপড়ে কেও মারা ঠিক নয়। একটা ব্যাঙের জীবনও আমাদের বেঁচে থাকার জন্য কতটা জরুরি। যুবকদের এই কথায় চালক তো হতবাক! তিনি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হন,আরও কোনো প্রাণীকেই ইচ্ছে করে চাপা দেবেন না,সমস্ত রকম প্রাণ বাঁচিয়েই তিনি গাড়ি চালাবেন।
মোবাইলে নিয়মিত খবর পড়তে এইখানে ক্লিক করুন WHATSAPP
দন্দীপুর উচ্চবিদ্যালয়ের জীব বিদ্যার শিক্ষক তথা ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শৈবাল ঘোষ দাসপুরের ওই যুবকদের কর্মকাণ্ডকে স্বাগত জানিয়ে বলেন,আমাদের প্রত্যেকেই এদের কাছ থেকে শিক্ষা নিতে হবে। আমরা যদি সচেতন হই এই পশুপাখির অকাল মৃত্যু রোধ করতে পারবো। এমনিতেই বিশ্ব উষ্ণায়ন,মোবাইল টাওয়ারের নানান সঙ্কেতের জ্বালায় অতিষ্ঠ ছোটোখাটো পাখি পক্ষী। তার ওপর রাস্তায়ও যদি পশু পাখিদের মৃত্যু নিয়ন্ত্রণ না করা যায় তাহলে আমরা নিজেদেরকেই মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেবো। কারণ আমাদের চারপাশের পরিবেশে গাছ,পশুপাখি না থাকলে জীবজগতের থেকে মানুষও বিলুপ্ত হবে।