নিজস্ব প্রতিনিধি, স্থানীয় সংবাদ, ঘাটাল: ঘাটালের শিলাবতী নদীর সাহেবঘাটের শহীদ ক্ষুদিরাম সেতু কাঠের ব্রিজ পারাপারের জন্য টোল ট্যাক্স বৃদ্ধি করায় জনসাধারণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। যার প্রতিবাদে আজ বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। ঘাটালে শিলাবতী নদীর সাহেবঘাটে শহীদ ক্ষুদিরাম সেতু (কাঠের ব্রিজ)পারাপারের জন্য সম্প্রতি টোল ট্যাক্স বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রতি মোটর সাইকেল ড্রাইভার সহ পূর্বে ছিল চার টাকা। বর্তমানে করা হয়েছে পাঁচ টাকা। প্রতি ট্রলি পিছু পূর্বে ছিল ২০ টাকা, বর্তমানে হয়েছে ২৫ টাকা। এরই প্রতিবাদে ‘সাহেবঘাট ব্রিজ নির্মাণ সংগ্রাম কমিটি’র উদ্যোগে আজ বিকেলে ব্রিজ সংলগ্ন স্থানে এক বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলে নেতৃত্ব দেন কমিটির সভাপতি ডাঃ বিকাশচন্দ্র হাজরা, যুগ্ম সম্পাদক কানাইলাল পাখিরা ও ঝাড়েশ্বর মাজি প্রমুখ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ন সংগ্রাম কমিটির যুগ্ম সম্পাদক নারায়ণচন্দ্র নায়ক। প্রসঙ্গত, ২০০২ সালে বাড়ানন্দী-সাহেবঘাটে শিলাবতী নদীর উপর প্রথম ওই কাঠের ব্রিজ তৈরি করা হয়। সেই সময় হরিরামপুরের বিপ্লবী ক্ষুদিরাম সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি ওই ব্রিজটি তৈরি করেন ও রক্ষণাবেক্ষণ করার দায়িত্ব পান। এবং তারাই টোল ট্যাক্স আদায় করা শুরু করেন। ব্রিজটি একদিকে ঘাটাল, অন্যদিকে দাসপুর-১ ব্লকের সংযোগকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু। সেতুটি দিয়ে দেওয়ানচক-১ ও দেওয়ানচক-২, অজবনগর-১, রাজনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের আনুমানিক ৪০-৫০ টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করে। ওই ব্রিজ দিয়ে কালিচক বাড়গোবিন্দ দেশপ্রাণ হাইস্কুল, সুরতপুর শ্রী অরবিন্দ শতবার্ষিকী বিদ্যামন্দির, রাজনগর হাইস্কুল, মহারাজপুর হাইস্কুল, চৌকা নেতাজি বিদ্যামন্দির সহ বেশ কিছু হাইস্কুল ও কয়েকটি প্রাইমারি স্কুলের কচিকাচারাও যাতায়াত করে। ব্রিজটি দিয়ে সাইকেল, মোটর সাইকেল, চার চাকার মাল ও যাত্রীবাহী গাড়ি প্রভৃতি যাতায়াত করে। সর্বোপরি এলাকাটি সবজি প্রধান এলাকা হওয়ায় কৃষিজীবীরা সবজি নিয়ে ওই সেতু পেরিয়ে গ্রামীণ হাট-বাজারে যান। ২০১৩ সালে বিধ্বংসী বন্যার প্রকোপে ব্রিজটি ভেঙে যায়। এরপর ২০১৪ সালে ফের নতুন ব্রিজ তৈরি করে এলাকার কয়েকজন বিত্তশালী ব্যক্তি মুনাফার স্বার্থে। তারা সেই থেকে টোল ট্যাক্স আদায় করেন এবং ২০১৬ ও ২০২০ সালে ফের ট্যাক্স বাড়ায়। বর্তমান করোনা মহামারীতে যখন মানুষজনের দুর্বিষহ অবস্থা, ঠিক সেই সময় আবার ২০২২ সালে ওই মালিকরা উপরোক্ত ট্যাক্স বাড়ানোয় জনসাধারণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
কমিটির যুগ্ম সম্পাদক কানাইলাল পাখিরা বলেন, আমরা চাই ব্রিজটি ব্লক প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ করুক। এবং জনসাধারণের স্বার্থে বিনা পয়সায় পারাপারের বন্দোবস্ত করুক এবং যত শীঘ্র সম্ভব ওই স্থানে একটি কংক্রিটের ব্রিজ নির্মাণ করা হোক।