তৃপ্তি পাল কর্মকার: অবশেষে ঘাটাল মহকুমার সমস্ত স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মীরা ‘রোপা-২০১৯’-এর বেতন কাঠামো অনুযায়ী সমস্ত বকেয়া পেলেন। ১ ফেব্রুয়ারি ওই বেতন কাঠামো মতো কয়েকটি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মীরা বর্ধিত বেতন পেলেও মহকুমার ১০২টি স্কুল পুরানো বেতন অনুযায়ী বেতন পেয়েছিলেন। আজ ১৯ ফেব্রুয়ারি বাকী ১০২টি স্কুলের সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মীরা ‘রোপা-২০১৯’ অনুযায়ী জানুয়ারি মাস পর্যন্ত সমস্ত বকেয়া পেয়ে গিয়েছেন। ঘাটাল মহকুমার অতিরিক্ত জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (এডিআই) তুহিনবরণ আদগিরি বলেন, এর ফলে কোনও স্কুলই আর বাকী রইল না। ১মার্চ থেকে প্রত্যেকটি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মীরা একই সঙ্গে ‘রোপা-২০১৯’ অনুযায়ী বেতন পেয়ে যাবেন। ঘাটাল মহকুমায় হাই ও জুনিয়ার হাই মিলিয়ে স্কুলের সংখ্যা ২১৬টি তার মধ্যে রোপা-২০১৯’এর আওতায় রয়েছে ১৯১টি স্কুল। ১ফেব্রুয়ারি বেতনের সময় দেখা যায় মাত্র ৮৯টি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মীরা বর্তমান রোপা অনুযায়ী বেতন পেয়েছেন। বাকী ১০২টি স্কুল পায়নি। যাঁরা রোপা-২০১৯ অনুযায়ী বেতন পাননি তাঁরা বেজায় ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েছিলেন। কেন ১ ফেব্রুয়ারি বহু স্কুলে রোপা-২০১৯ অনুযায়ী বেতন হয়নি, তার কারণ হিসেবে জানা যায়, রোপা-২০১৯ অনুযায়ী বেতন পেতে হলে প্রত্যেকটি শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মীর বেতন কাঠামো ডিআই অফিসে অ্যাকাউন্ট সেকশনে ভেটিং করে অনলাইনে আপডেট করতে হয়। ২৭ জানুয়ারি দুপুর ১২টায় সেই লিঙ্ক শিক্ষা দপ্তর বন্ধ করে দেয়। ফলে অনেক স্কুলেরই তথ্য আপডেট করা যায়নি। ২৯ জানুয়ারি সেই লিঙ্ক চালু হলেও অনেক স্কুল ওই কয়েক দিনের মধ্যে (১ ফেব্রুয়ারি বেতন বন্ধের আশঙ্কায়) রোপা-২০০৯এ ফিরে পুরানো হারেই ১ তারিখের বেতনটি সুনিশ্চিত করে। ঘাটাল মহকুমার মাত্র ৮৯টি স্কুলকে জানুয়ারিতে রোপা-২০১৯এ আপডেট করা সম্ভব হয়েছিল। তাই ১ ফেব্রুয়ারি ওই ৮৯টি স্কুল রোপা-২০১৯ অনুযায়ী বেতন পায় আর ১০২টি স্কুল পুরানো হারে বেতন পায়। তারপরই এডিআই অফিসের সিনিয়র স্টাফ অনুপ চট্ট্যোপাধ্যায় সকাল ৬টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত ধারাবাহিক ভাবে অক্লান্ত পরিশ্রম করে সমস্ত স্কুলের তথ্য আপডেট করার ফলে আজ ওই ১০২টি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মীরা জানুয়ারি পর্যন্ত রোপা-২০১৯ এর সমস্ত বকেয়া হাতে পেয়েছেন। দাসপুর-২ ব্লকের গোপালপুর দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক বিমলেন্দু পাল বলেন, এডিআই অফিসে সাত জনের পরিবর্তে মাত্র দু’জন স্টাফ। অনুপবাবু আন্তরিকভাবে এভাবে প্রচেষ্টা না চালালে এটা বাস্তবায়িত কখনই হত না। ১ মার্চও রোপা-২০১৯ অনু্যায়ী বেতন পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে যেত। পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির নেতা সুজিত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বিষয়টি না বুঝে এটাকে নিয়ে রাজনীতি করতেও ছাড়েনি বামপন্থী শিক্ষক সংগঠন এবিটিএ। ১ ফেব্রয়ারি রোপা-২০১৯ অনু্যায়ী বেতন না পাওয়ার ফলে ওই সংগঠনের সদস্যরা ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে অগণতান্ত্রিকভাবে এডিআই অফিসে ঝামেলাও পাকায়। আলফাল মন্তব্য করে। শিক্ষকরা না বুঝে এরকম মন্তব্য করবেন সেটা আমরাও ভাবতে পারিনি।