সৌমেন মিশ্র:পর্যটকদের নিয়মিত ভিড় জমানোর জায়গা হয়ে দাঁড়িয়েছে রামগড়ের চাতালটি। শুধু স্থানীয় এলাকাবাসীরাই নয়, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের টানে দূরদূরান্ত থেকে নিয়মিত মানুষরা ওখানে আসছেন। ঘাটাল-মেদিনীপুর সড়কের উপর ওই চাতাল সংলগ্ন পুরো এলাকাটাই দিগন্ত বিস্তৃত মাঠে ঘেরা। তাই প্রতি বছরের মত এবছরও সারা এলাকা জলে ডুবলেও, নতুন করে নির্মিত চাতালটি বহালতবিয়তে জেগে রয়েছে। ফলে, ওই চাতাল থেকে বন্যাপ্লাবিত পুরো জায়গাটির দৃশ্য নান্দনিক হয়ে উঠেছে এলাকা সহ পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষদের কাছে। তারা প্রতি বিকেলেই ওই প্ৰাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের জন্য ভিড় জমাচ্ছেন। তবে রবিবারের বিকেলে একটু বেশিই জনসমাগম লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তাই সপ্তাহান্তে পর্যটকদের দেদার ভিড় চাতালটিকে করে তুলেছে একটি ‘মিনি পর্যটনকেন্দ্র’। এছাড়া, ওই চাতাল থেকে বন্যাপ্লাবিত মাঠে প্রমোদভ্রমণের জন্য নৌকারও ব্যবস্থা রয়েছে। লোকসমাগম দেখে প্রতিবিকেলে চাতালে বসছে খাবারের দোকান। ওই চাতালের পার্শ্ববর্তী সামাট গ্রামের বাসিন্দা অমিত দোলই বলেন, ওই চাতাল সহ সংলগ্ন এলাকাটিকে এখন আর চেনাই যাচ্ছে না। অথচ আগের বছর পর্যন্ত ছবিটা ছিল সম্পূর্ণ অন্য রকম।[•এই খবর সম্পর্কিত ভিডিওটি দেখতে চাইলে ▶এখানে ক্লিক করতে পারেন।]
তাহলে কি ওই চাতাল সংলগ্ন মাঠগুলিতে জল কমে গেলে ওখানে ভিড় কমে যাবে? মোটেই কমবে না বলে মনে করছেন নাড়াজোল গ্রামের বাসিন্দা মোতিন আনসারি। তিনি বলেন, জল কমে গেলে আবার এলাকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অন্য রকম লাগবে। তখন ওই মাঠগুলিতে চাষ হবে। মাঠগুলি সবুজ-সবুজে ভর্তি হয়ে যাবে। সেই দৃশ্যও কিন্তু জল-ভর্তি মাঠের থেকে মোটেই কম নয়।
বিশেষ করে প্রতিবছর বন্যার সময় ঘাটাল-মেদিনীপুর সড়কের উপর এই চাতালটি কার্যতই জলের তলায় চলে যেত। ফলে প্রতিবছরই বন্যার সময় গণ পরিবহণও বেশ কিছু কালের জন্য বন্ধ রাখতে হয়। কিন্তু এবছর সরকারিভাবে চাতালটি পুনঃনির্মাণের পর পুরো ছবিটাই বদলে গিয়েছে। যাত্রী পরিবহণের পাশাপাশি এলাকাটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পর্যটকদের বিচরণের জায়গা করে তুলেছে। তবে এই করোনা আবহে লকডাউন চলাকালে নিয়মিত চাতালের উপর ভিড় জমানোর বিষয়টিতে প্রশাসনের আদৌও সমর্থন আছে কিনা সেই বিষয়টি ভেবে দেখা জরুরি বলে মনে করছেন এলাকার একাংশ।
ঘাটাল মহকুমার বাস মালিক সংগঠনের এক কর্মকর্তা প্রভাত পান বলেন, রামগড়ের চাতালে বাস রাস্তার পাশে যেভাবে নতুন করে ভিড় জমতে শুরু করেছে সেটা মোটেই ভাললক্ষণ নয়। এর ফলে যে কোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। মানছি ওখানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মানুষকে টানছে। কিন্তু যেহেতু রাস্তা ছাড়া চাতালের পাশে আর কোনও অতিরিক্ত জায়গা নেই তাই কখনও কোনও গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এগিয়ে এলে ওখানের সময় কাটাতে যাওয়া মানুষজন তা দেখতে পেলেও নিজেদের রক্ষা করতে পারবেন না। কারণ চাতালের পরেই রয়েছে বড় খাদ। তাই এই বিষয়টি প্রশাসনের ভেবে দেখা উচিত।
ওই রাস্তার উপর দিয়ে প্রত্যেক দিন দাসপুরের বিধায়ক মমতা ভুঁইঞা প্রত্যেক দিন একাধিক বার যাতায়াত করেন। তাঁকে ওই চাতালের ক্রম বর্ধমান ভিড় নিয়ে প্রশ্ন করা হলে, তিনি বলেন মাঝে মাঝে ওখানে কয়েক জনকে দেখা যায়।ধারাবাহিক ভিড় বাড়লে বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে।•রামগড়ের ছবিগুলি তুলেছেন সৌরভ পাইন।
ঘাটাল মহকুমার সমস্ত খবর পেতে আমাদের MyGhatal মোবাইল অ্যাপ ডাউনলোড করুন [লিঙ্ক 👆] এবং ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন[লিঙ্ক 👆]।