রবীন্দ্র কর্মকার: মহিলার কন্ঠে কথা বলে প্রেমের অভিনয়৷ তাতেই মুগ্ধ হয়ে ‘বান্ধবী’কে কয়েক দফায় বেশ কয়েক হাজার টাকা দেন দাসপুরের গোপাল পুর গ্রামের এক যুবক। পরে সেই বান্ধবীর পরিচয় জেনে মাথায় বাজ পড়ার মতো অবস্থা অভিযোগকারী যুবকের৷ এতদিন যে ‘বান্ধবী’ সুমিষ্ট স্বরে প্রেমের অভিনয় করে এসেছে, সে আসলে মেয়েই নয় জলজ্যান্ত যুবক৷ নাম শঙ্খ মণ্ডল। ২১ বছরের শঙ্খ চন্দ্রকোণা বিদ্যাসাগর কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র বলে দাবি করেছে।
যদিও সাধারণভাবে শঙ্খ এই কন্ঠে কথা বলে না৷ তখন তার গলা রীতিমতো পুরুষালি ও রাশভারী৷ কিন্তু কোনও অপরাধ ঘটানোর সময় মুহূর্তের মধ্যে নিজের গলা পাল্টে ‘মহিলা-কন্ঠী’ হয়ে যাওয়ার ক্ষমতা রয়েছে তার৷
পুলিশ জানিয়েছে, বিশ্বজিৎ প্রামাণিক নামে গোপালপুরের বাসিন্দা ওই যুবককে ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠায় এক ‘যুবতী’৷ ‘সুস্মিতা সুস্মিতা’ নামে ওই ফেসবুক প্রোফাইলে ছিল এক সুন্দরীর ছবি৷ তার অনুরোধে যুবক নিজের মোবাইল ফোনের নম্বর দেন৷ একদিন যুবককে ফোন করে ওই ‘বান্ধবী’৷ তার সুমিষ্ট মেয়েলি কন্ঠ শুনে মুগ্ধ হন যুবক৷ একেকবার একেকটি সিমকার্ড থেকে ফোন করে ওই ‘বান্ধবী’৷
বিশ্বজিৎ বলেন, শঙ্খ এমন ভাবে মহিলার স্বরে কথা বলত আমি বুঝতে পারতাম না। আমি ওকে এক জন যুবতী ভাবতাম। সেই থেকেই আমাদের কথা বার্তা চলে। পড়াশোনা, টিউশনি খরচের জন্য আমাকে টাকা চাইত। আমার অনুকম্পা হত আমি টাকাও দিয়েছি। কিছু দিন আগে আমাকে বলে আমার হার্ট অপারেশন হবে টাকা দিতে হবে। অপারেশনের জন্য ৫০ হাজার টাকাও দিয়েছি। বিশ্বজিৎবাবু সমস্ত টাকাই অনলাইনে পেমেন্ট করছে।
পরে কোনও একটি কথাতে সন্দেহ হয়। গত কাল শঙ্খকে ধরার জন্য বিশ্বজিৎবাবুরা একটি ফাঁদ পাতে। বিশ্বজিৎবাবুর এক বন্ধু একটি কনে সাজানোর জন্য শঙ্খর সঙ্গে যোগাযোগ করে। শঙ্খ সেই প্রস্তাবে রাজি হয়ে যায়। শঙ্খ বলে, সে ওই কনে সাজানোর বুকিঙের অ্যাডভান্স টাকা নিতে পারবে না। অন্য একজনকে পাঠাবে। এই বলে সে শঙ্খ নিজেই ওই টাকা আনতে এলে বিশ্বজিৎবাবুরা তাকে ধরে পুলিসের হাতে তুলে দেন।