মন্দিরা মাজি: নিজেদের ভিন্ন ভিন্ন প্রতিভার পরিচয় দিয়ে পুরস্কৃত হল ঘাটাল মহকুমার চারজন[✔‘স্থানীয় সংবাদ’-এর সমস্ত কিছু জানতে এখানে ক্লিক করুন]কিশোরী। ওই চার কিশোরীরা হল দেবাঞ্জলি মাইতি, প্রিয়া মাইতি, নিশিতা মণ্ডল ও সোহিনী ঘোষাল। এই চারজন কিশোরীই তাদের কাজের মাধ্যমে সমাজের কাছে পৌঁছে দিয়েছে সচেতনতামূলক বার্তা। নাবালিকা বিয়ে দেখলে গর্জে ওঠে এই কিশোরীরাই। নিজেদের সাহসিকতা দেখিয়ে রুখে দিয়েছে সেই নাবালিকার বিয়ে। আর পাঁচটা মেয়ের থেকে কিছুটা ভিন্ন
প্রতিভার জন্যই তাদের পুরস্কৃত করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
দাসপুর-২ ব্লকের রানিচকের দেবাঞ্জলি বর্তমানে রানিচক দেশপ্রাণ উচ্চ বিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। পড়াশোনার পাশাপাশি দেবাঞ্জলি সমাজের বিভিন্ন কু-প্রথার ওপর নাটক লিখে নিজেই তা মঞ্চস্থ করে। ২ ফেব্রুয়ারি চাঁইপাটের সৃষ্টিশ্রী মেলায় নিজের লেখা ‘বাল্যবিবাহ আর নয়’ নাটকটি মঞ্চস্থ করেছিল দেবাঞ্জলি।
ওই ব্লকেরই আরিট গ্ৰামের প্রিয়া বাড়ির ফেলে দেওয়া জিনিসপত্র দিয়ে নিত্য নতুন জিনিস তৈরি করে। মেয়েদের পরার বিভিন্ন ধরনের কাগজের অলংকার তৈরি করে। প্রিয়া ওই গ্ৰামের
আরিট বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরের একাদশ শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে।
নিজের কবিতার মাধ্যমেই বাবা-মা, প্রকৃতি সহ অন্যান্য বিষয়গুলিকে ফুটিয়ে তোলে দাসপুর-২ ব্লকের কলাগেছিয়ার নিশিতা। নিশিতাও একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। বর্তমানে সে খানজাপুর ইউনিয়ন হাইস্কুলের ছাত্রী।
১৫ বছর পর নিজের পরিবারকে খুঁজে পেয়েছে মা হারা ছোট্ট সোহিনী। সেই খবর আমাদের স্থানীয় সংবাদের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছিল। দীর্ঘ ১৫ বছর পর নিজের পরিবারে ফিরে পরিবারের সকল সদস্যের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছে সোহিনী। সোহিনীর এই কাজের জন্য তাকেও পুরস্কৃত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, চন্দ্রকোণা-১ ব্লকের রামজীবনপুরের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা জয়গুরু সেবাঞ্জলি সেবা সমিতির পক্ষ থেকে এই চারজন কিশোরীকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। ২৭ মার্চ সেবাঞ্জলি সেবা সমিতির একটি বার্ষিক অনুষ্ঠান ছিল। ওই সেবা সংঘের সম্পাদক প্রশান্তকুমার ঘোষ বলেন, ‘সেবাঞ্জলি কিশোরী রত্ন সম্মাননা-১৪২৮’ এই পুরস্কারটি এই বছরই আমরা প্রথম শুরু করেছি। ঘাটাল মহকুমার চারজন কিশোরীকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে আমরা এই ধরনের অভিনব প্রতিভার কিশোরীদের পুরস্কৃত করার চেষ্টা করবো। এটা আমাদের পঞ্চমতম বর্ষ। এবারের অনুষ্ঠানে ‘সবুজের গান’ নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবছর বিভিন্ন দিকের ওপর পুরস্কার দেওয়া হয়ে থাকে। উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গরা। প্রায় দেড় শতাধিক সাহিত্যপ্রেমী মানুষকে নিয়ে ওইদিনের অনুষ্ঠানটি সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।