রবীন্দ্র কর্মকার, স্থানীয় সংবাদ, ঘাটাল: মৃতদেহ উদ্ধারের ৩৬ ঘণ্টা পরেও ময়না তদন্ত হয়নি। সেই অভিযোগে আজ ২০ জুলাই বিকেলে দাসপুর থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন মৃতের পরিজনেরা। রবিবার রাতে দাসপুর থানার হোসেনপুরের গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয় দেড় মাস আগে বিয়ে হওয়া মণিকা বেরা ঘোড়ইয়ের। আর সেই মৃতদেহের ময়না তদন্তে গড়িমশির অভিযোগ তুলেই আজ মৃত মেয়ের বাপের বাড়ির আত্মীয় পরিজনেরা দাসপুর থানা ঘেরাও করলেন। মৃতের পরিবারের অভিযোগ,১৮ জুলাই রবিবার রাতে হোসেনপুরের শ্বশুর বাড়িতেই সন্দেহজনকভাবে মৃত্যু হয় তাদের বছর ২২ এর মেয়ে মণিকার। মৃত্যুর পরেই মণিকাদেবীর শ্বশুর বাড়ির লোকেরা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। মণিকাদেবীর বাপের বাড়ি পাশের গ্রাম যদুপুরে। তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়েই বাপের বাড়ির লোকেরা মণিকাদেবীর শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। পুলিস গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
হোসেনপুরের দীপঙ্কর ঘোড়ইয়ের সাথে মাত্র দেড় মাস আগে মণিকাদেবীর বিয়ে হয়। বিয়ের সাত বছরের মধ্যে গৃহবধূর মৃত্যু হলে নিয়ম অনুযায়ী ফার্স্টক্লাস ম্যাজিস্ট্রেটকে দিয়ে ইনকোয়েস্ট তথা সুরৎহাল তদন্ত করাতে হয়। মেয়ের পরিবারের লোকেরা বলেন, সেই ইনকোয়েস্ট রিপোর্ট হয়ে গিয়েছিল। তা সত্ত্বেও পুলিশ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে সোমবার মৃতদেহের ময়না তদন্তের ব্যবস্থা করেনি। সেজন্যই আজ মণিকাদেবীর বাপের বাড়ির লোকেরা দাসপুর থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান।
দাসপুর থানার পুলিস জানিয়েছে, ময়না তদন্ত করা নিয়ে পুলিশের উদ্যোগের অভাব ছিল না। পুলিশ সোমবার সঠিক সময়েই ময়না তদন্ত করার প্রস্তুতি শুরু করেছিল। মৃতের বাবা অন্য রাজ্যে থাকেন। তিনি সোমবার অনেকটা দেরিতে থানায় পৌঁছান। মৃতদেহ কে নেবে সেই সিদ্ধান্ত নিতে মৃতের পরিবার অনেকটা দেরি করে। সেজন্য ঘাটাল হাসপাতালে দেহ পাঠাতে দুপুর আড়াইটা বেজে যায়। সোমবার ওই সময় ঘাটাল হাসপাতালই ময়না তদন্ত করতে না চাইলে দেহ ফিরিয়ে নিয়ে আসতে হয়। আজ দেহ পাঠানো হয়। কিন্তু আজও ঘাটাল হাসপাতাল ওই দেহ ময়না তদন্ত করতে না চাইলে দেহকে মেদিনীপুরে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুলিস জানিয়েছে, ময়না তদন্ত ডাক্তার করেন, পুলিস নয়। তাই হাসপাতাল যদি সময় মতো ময়না তদন্ত না করে মৃতদেহ ফিরিয়ে দেয় সেক্ষেত্রে পুলিসের দোষটা কোথায়?
সূত্রের খবর ঘাটালে ময়না তদন্তে সমস্যা হওয়ায় পূর্ণাঙ্গ তদন্তের জন্য দেহ ইতি মিধ্যেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সদর মেদিনীপুরে পাঠানো হচ্ছে। জানা গেছে মেয়ের বাড়ির পক্ষে সোমবার সন্ধ্যে নাগাদ ছেলের বাড়ির ছেলে,বাবা এবং ছেলের মায়ের বিরুদ্ধে মৃত মেয়ের বাবা হেমন্ত বেরা লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন দাসপুর পুলিশে। অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরই ছেলে দীপঙ্করকে গ্রেপ্তার করে দাসপুর পুলিশ। তাকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে।