মন্দিরা মাজি, স্থানীয় সংবাদ, ঘাটাল:•মাঝপথে দীর্ঘ সময় ধরে বাস দাঁড় করিয়ে[✔‘স্থানীয় সংবাদ’-এর সমস্ত কিছু জানতে এখানে ক্লিক করুন] রাখা, তারপর অত্যধিক গতিতে গন্তব্যের দিকে বাস ছুটিয়ে নিয়ে যাওয়া। এই ধরনের কম-বেশি অভিযোগ বাসের নিত্য যাত্রীদের থেকে আমরা প্রায়শই শুনে থাকি। কিন্তু যাত্রীদের অভিযোগকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতেও দেখেছি আমরা। ঘাটাল মহকুমার ওপর দিয়ে প্রতিদিন কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রুটের বাস ছুটে যায় গন্তব্যের দিকে। তবে ঘাটাল-মেদিনীপুর ও ঘাটাল-পাঁশকুড়া এই মূল দুটি রুটের বাসে নিত্য যাতায়াত করে অসংখ্য কলেজ পড়ুয়া, অফিস কর্মী ও সাধারণ মানুষ। তাঁদের অভিযোগ একটাই, বাস দীর্ঘক্ষণ দাঁড় করিয়ে রাখার পর তা অত্যধিক গতিতে গন্তব্যের দিকে ছুটিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
এই রকমই ঘাটাল-মেদিনীপুর সড়কের নিত্যযাত্রী এক কলেজ পড়ুয়া বলেন, ওই রুটের বাসগুলি ঘাটাল থেকে মেদিনীপুরের উদ্দেশ্যে ঘাটাল কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড থেকে ছেড়ে আসার সময় বসন্তকুমারী বালিকা বিদ্যালয়ের আন্ডারপাশের কাছে প্রায় ২০-২৫ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকে। তারপর অত্যধিক গতিতে অন্য গাড়িগুলির সাথে যথারীতি কম্পিটিশন করে বকুলতলা পৌঁছায়। আবার বকুলতলায় ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করে। কারণ পাঁশকুড়ার দিক থেকে আসা মেদিনীপুর যাবার যাত্রী তোলার জন্য বাসগুলি অতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে। যখন বকুলতলা থেকে মেদিনীপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যেতে শুরু করে ততক্ষণে মেদিনীপুরগামী পরবর্তী বাস বকুলতলায় এসে হাজির হয়ে যায়। তারপর দুটি বাসে চলে কম্পিটিশন। কিছু কিছু সুপার ফাস্ট বাস ছাড়া প্রায় বেশিরভাগ বাসগুলিই এই একই পন্থা অবলম্বন করে।
ওই রুটের মেদিনীপুরের দিক থেকে আসা এক বাসযাত্রী জানান, একই সমস্যায় ভুক্তভোগী তিনিও। মেদিনীপুর থেকে বাসগুলি ছেড়ে আসার পর কেশপুরে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে। তারপর বাসের গতি যা হয়, তাতে প্রাণ হাতে নিয়ে ভগবানের নাম জপ করা ছাড়া আর কোনও উপায় থাকে না। প্রত্যেকটি বাস যদি বেশি সময় একটি স্টপেজে না দাঁড়িয়ে মিনিট পাঁচেক সময় দাঁড়ানোর পর গন্তব্যের দিকে রওনা দেয় তাহলে পরবর্তী বাসগুলিও নির্দিষ্ট সময়ে পৌঁছাবে। যারফলে যাত্রীদেরও বাসস্টপে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে না বাসের জন্য।
যেহেতু ওই রুটের বাসগুলি কেশপুর বাস স্ট্যান্ড থেকে নিয়ন্ত্রিত হয়, তাই কেশপুর বাস সংগঠনের মালিক সফেদ আলিকে বিষয়টি জানালে তিনি বলেন, এই ধরনের সমস্যার কথা আমরা শুনেছি। বহুবার যাত্রীদের থেকে অভিযোগও পেয়েছি। আমরা অতি সত্ত্বর বাস মালিকদের সঙ্গে কথা বলে এই সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করবো।
ঘাটাল-পাঁশকুড়া রুটের বাসের ক্ষেত্রেও ঠিক একই সমস্যা দেখা যায়। ওই রুটের কয়েকজন নিত্য যাত্রী জানিয়েছেন, বাসগুলি কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড থেকে ছেড়ে আসার পর কোনও বাস বকুলতলায় আবার কোনও বাস গৌরায় অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে। এতে যাত্রীরা খুবই বিরক্ত হন। কখনও কখনও এমন হয়েছে বাসের এইভাবে দাঁড়িয়ে থাকার জন্য কোনও অফিসকর্মী বা কলেজ পড়ুয়া সঠিক সময়ে নিজের কাজের জায়গায়, ক্লাসে পৌঁছাতে পারেননি।
যাত্রীদের এই সমস্যার কথা জানিয়ে জিজ্ঞেস করা হলে, ঘাটাল ইন্টার ও ইন্ট্রা রিজিয়ন বাস অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য প্রভাত পান এই অভিযোগের কথা স্বীকার করে বলেন, এক সময় রাস্তা খারাপ থাকার জন্য বাসগুলি দেরি করে গন্তব্যে পৌঁছাত। কিন্তু এখন রাস্তার অবস্থা অনেকটাই ঠিক হয়েছে। তাই বাস মালিকেরা আগের সময়কেই এখনও ধরে রেখে বাস চালান। এই বিষয়ে বাস মালিকদের সঙ্গে আমাদের আগেও কথা হয়েছে। কিন্তু কোনও কাজের কাজ হয়নি।
পশ্চিম মেদিনীপুর পরিবহণ যাত্রী কমিটির সম্পাদক তপন জানা বলেন, যাত্রীদের থেকে এই অভিযোগ পেয়ে বাস মালিকদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। এমনকি প্রশাসনিক মহলেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। মালিক পক্ষ এসে কথা বলেছে, কিছুদিনের জন্য সময় ঠিকঠাক হলেও পরে আবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি চলছে।
Home এই মুহূর্তে ব্রেকিং দীর্ঘক্ষণ বাস দাঁড় করিয়ে রাখার পর অত্যধিক গতিতে গন্তব্যের দিকে ছুটিয়ে নিয়ে...