তৃপ্তি পাল কর্মকার: এ যেন রূপকথার গল্প! ৩০ বছর পর স্বভূমিতে ফিরে গেলেন এক অশীতিপর বৃদ্ধ! সেটা আবার ঘাটাল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি। আর তা সম্ভব হয়েছে ঘাটাল থানার ওসি দেবাংশু ভৌমিক এবং ওই থানার অন্যান্য পুলিশ কর্মীদের উদ্যোগে।
এই বৃদ্ধকে দেখছেন। প্রথমে না জানা গেলেও পরে জানা যায় এনার নাম শ্যামসুন্দর পোড়িয়া। ইনি প্রায় তিন বছর ধরে ঘাটাল হাসপাতালে ভরতি ছিলেন। ভরতি ছিলেন এক অজানা রোগী হিসেবে। ওই হাসপাতালের সুপার কুণাল মুখোপাধ্যায় বলেন, ২০১৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি সোনাখালি হাসপাতাল থেকে রেফার হয়ে অজানা রোগী হিসেবে আমাদের হাসপাতালে ভরতি হন। চিকিৎসার পর সুস্থ হলেও ঠিকানা বলতে না পারায় ছুটি দেওয়া যায়নি। তাই হাসপাতালের সংক্রমণ বিভাগের একটি রুমেই থাকতেন। বাড়ির লোক না পাওয়ার ফলে তাকে ডিসচার্জ করতে পারিনি। তাঁর খাবার ব্যবস্থা হাসপাতাল থেকেই করা হয়। রোগীর বাড়ির লোকেদের পরিত্যক্ত জিনিসপত্রই তিনি ব্যবহার করতেন।
ঘাটাল থানার ওসি বলেন, হাসপাতালে থাকাকালীন ওই বৃদ্ধ কেবল মাত্র তাঁর গ্রামের নামটা বলতে পেরেছিলেন। গ্রামের নাম দেওপদা জেনেই আমরা ওনাকে ফিরিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিই। অনেক চেষ্টার পর সফলও হই। দিন তিনেক আগে শ্যামসুন্দরবাবুর বাড়িতে ওড়িশ্যার বৈশিং থানার মাধ্যমে খবর দেওয়া হয়। আজ ৪ এপ্রিল তাঁর দুই ভাইপো অশোক পোড়িয়া এবং ঈশ্বর পোড়িয়া ওড়িশ্যার বৈসিং থানার কাছ থেকে খবর পেয়ে এদিন ঘাটাল থানায় আসেন পরে ঘাটাল থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে হাসপাতালে যান। সেখান থেকে ছুটি নিয়ে ওই বৃদ্ধকে রাতের গাড়িতে ওড়িশ্যার উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
অশোকবাবুদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, অবিবাহিত শ্যামসুন্দরবাবু প্রাইভেট টিউটর ছিলেন। প্রায় ৩০ বছর আগে কোনও কারণে নিরুদ্দেশ হয়ে যান। তারপর থেকে বহু চেষ্টা করেও খোঁজ পাওয়া যায়নি। আজ কাকুকে পেয়ে খুব ভালো লাগছে।