নিজস্ব সংবাদদাতা, স্থানীয় সংবাদ ঘাটাল: এখনও কথা রাখতে পারলেন না ঘাটালের সাংসদ দেব। নতুন বাড়ি তৈরি করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক বিধবার মাটির বাড়ি ভেঙে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। দেবের কথা মতো সেই নতুন বাড়ি আজও তৈরি হল না। ফলে বর্ষার পর এই শীতেও দাসপুর-২ ব্লকের সোনামুইয়ের বাসিন্দা পান্তি পিসির ঠাঁই এখন স্কুল দুয়ারে।
সোনামুই গ্রামের বাসিন্দা পান্তি পিসির ভালো নাম শিখা চক্রবর্তী। তাঁর স্বামী নেই। একমাত্র মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। পান্তি পিসি ওই গ্রামেই একটি ভগ্নপ্রায় মাটির বাড়িতে থাকতেন। ওই ভগ্নপ্রায় মাটির বাড়ির ভিডিও ২২মে স্থানীয় সংবাদে প্রচারিত হলে সেটি ঘাটালের সাংসদ দীপক অধিকারী তথা দেবের নজরে আসে। ওই দিনই তিনি টুইট করে জানান ১৫ দিনের মধ্যে তিনি পান্তিপিসির নতুন বাড়ি বানিয়ে দেবেন। বেশ কয়েকটা ১৫ দিন কেটে গেল পান্তি পিসির জন্য দেব আর বাড়ি তৈরি করে দিলেন না। ফলে বর্ষার পর এই শীতেও পান্তি পিসিকে ওই গ্রামের একটি স্কুল দুয়ারে দিন কাটাতে হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দেব টুইট করার দিন দুই পরেই সাংসদ প্রতিনিধি রামপদ মান্না সহ বেশ কয়েক জন তৃণমূল নেতা পান্তি পিসির বাড়ি পরির্দশনে যান। তাঁরাও নিজের চোখে পান্তিপিসির ভগ্ন বাড়ির দশা দেখেন। দেবের কথা মতো নতুন বাড়ি তৈরি করার তোড়জোড় শুরু করেন। ওই সময়েই পান্তি পিসিকে স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খোলা দুয়ারে স্থানান্তরিত করে তাঁর মাটির বাড়িটি ভেঙে দেওয়া হয়। নতুন বাড়ির তৈরির কাজও শুরু হয়। সংবাদ প্রতিদিনের সাংবাদিক শ্রীকান্ত পাত্রের বাড়ি ওই গ্রামে। তিনি বলেন, বাথরুম সহ ৩২০ বর্গ ফুটের ছাদ সহ একটি বাড়ি নির্মাণের প্রস্তুতি শুরু করা হয়। দেব টাকা দেবে এই ভরসায় ইমারতি দ্রব্যের ব্যসায়ীরাও সরল বিশ্বাসে মালপত্র সরবরাহ করতে শুরু করে দেন। পান্তিপিসি বলেন, কিন্তু প্রায় ছ’মাস কেটে গেল আমাকে স্কুলের সেই পরিত্যক্ত জায়গায় নিরাপত্তাহীনতার মধ্যেই দিন কাটাতে হচ্ছে। বাড়ি তৈরি মাঝ পথেই বন্ধ রয়েছে।
পান্তি পিসি জানান, মাঝে জেলা শাসক তাঁর বাড়ির জন্য এক লক্ষ ৩০ হাজার টাকা মঞ্জুর করেছেন। তার মধ্যে ৬৫ হাজার টাকা তিনি হাতে পেয়েছেন। ওই টাকা থেকেই মিস্ত্রি ও ইমারতি দ্রব্য বিক্রেতাদের কিছু দেওয়া হয়েছে। রাজ মিস্ত্রি পবন কাণ্ডার বলেন, যে এলাকার উপর ভিত দিয়ে বাড়ি তৈরি হচ্ছে সেটা সম্পূর্ণ করতে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা লাগবে। টাকা না থাকার জন্য এখন কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। যদিও রাম মান্না জানিয়েছেন শীঘ্রই পান্তি পিসির বাড়ি তৈরির কাজটি শেষ করে দেওয়া হবে।