বাবলু মান্না, 👆‘স্থানীয় সংবাদ’, ঘাটাল [মো:9134719616]: পৃথিবীর প্রাচীনতম চিকিৎসা পদ্ধতি হলো আয়ুর্বেদ। যার জন্মভূমি এই ভারতবর্ষ। এই আয়ুর্বেদ হল অথর্ববেদের উপাংশ। শুধু ঔষধি গাছ গাছড়া নয়, বিভিন্ন খনিজ পদার্থ (খনিজ লবণ, শিলাজিৎ ইত্যাদি), ধাতু (সোনা, লৌহ ইত্যাদি), রাসায়নিক (সালফার, আর্সেনিক ইত্যাদি), বিষ (কুচিলা, বৎসনাভ ইত্যাদি), জৈব (গোমূত্র, গোদুগ্ধ ইত্যাদি), পদার্থের ব্যবহার এই শাস্ত্রে উল্লেখ আছে। কাজেই আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা মানেই জড়িবুটি নয়। আর যারা ভাবেন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় সার্জারি (শল্যচিকিৎসা) নেই, তাদের এটা জেনে নেওয়া উচিত যে, শল্যচিকিৎসার জনক হলেন মহর্ষি সুশ্রুত এবং তাঁরই বর্ণিত শল্যচিকিৎসার যন্ত্র ,শস্ত্র এবং শল্য চিকিৎসার পদ্ধতি আজও আধুনিক চিকিৎসাশাস্ত্র তথা এলোপ্যাথিতে ব্যবহার হচ্ছে।
বর্তমানে চিকিৎসা পদ্ধতি বলতে এখনো সাধারন মানুষরা কেবল এলোপ্যাথি চিকিৎসাই বোঝেন। কিন্তু এতদিনে আমরা প্রত্যেকে বুঝে গেছি শুধুমাত্র এলোপ্যাথি চিকিৎসা দ্বারা স্বাস্থ্য রক্ষা করা সম্ভব নয়। প্রত্যেক প্যাথির যেমন ‘স্কোপ’ আছে, তেমনি ‘লিমিট’ও আছে। এলোপ্যাথিক যদি ‘সায়েন্স অফ ইলনেস’ হয়, তাহলে আয়ুর্বেদ হলো ‘সায়েন্স অফ ওয়েলনেস’। শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক সুস্থতার বার্তা আয়ুর্বেদিকে মেলে। এরকম অনেক রোগীরাই এখন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা করাতে নিশ্চিন্তপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসছেন, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই এলোপ্যাথিক চিকিৎসায় বিশেষ উপকার না পেয়ে আয়ুর্বেদে উপকার পেয়েছেন। উল্লেখ্য, টিউমার, সিস্ট, বন্ধ্যাত্ব, পলিপ, এলার্জি, অর্শ, কোষ্ঠকাঠিন্য, অনিদ্রা, বদহজম, মধুমেহ , উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল, মাইগ্রেন, ফিসার, ফিসচুলা, যকৃত জনিত সমস্যা, হৃদরোগ, কিডনি জনিত সমস্যা, বাতের ব্যথা, নার্ভ জনিত সমস্যা, চর্মরোগ, যৌন রোগ, প্রভৃতি নানা রোগের চিকিৎসার জন্য এখন শুধু দাসপুর-২ ব্লকের রোগীরাই নন, নিকটবর্তী অন্যান্য জেলা থেকেও রোগীরা চিকিৎসা করাতে আসছেন এই নিশ্চিন্তপুরের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা কেন্দ্রে। এটি রাজ্য সরকারের অধীনস্থ একটি স্টেট আয়ুর্বেদিক ডিসপেনসারি, যেটি ২০০৪ সালে এই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সাথে যুক্ত হয়। তদানীন্তন চিকিৎসক অবসরপ্রাপ্ত হওয়ার পর ২০১৩ সালে বর্তমান চিকিৎসক (সিনিয়র আয়ুর্বেদিক মেডিকেল অফিসার) চিকিৎসাভার গ্রহণ করার পর থেকে এই আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা কেন্দ্রে আস্তে আস্তে করে রোগী বাড়তে থাকে। কিন্তু বর্তমানে এই লকডাউন পরিস্থিতিতে কোভিড বিধি মেনেই চিকিৎসা পরিষেবা চলছে এখানে। অনেক কষ্টসাধ্য রোগের চিকিৎসায় অনেক রোগীরাই উপকার পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে কয়েকটি সফল ঘটনার উল্লেখ করা হলো।
১) খেপুত গ্রামের বাসিন্দা সুপ্রিয়া সামন্ত জরায়ুর সিস্ট এর কারণে গিয়েছিলেন ওই ডাক্তারবাবুর কাছে, ইউএসজি রিপোর্ট দেখে টানা ছ’মাস আয়ুর্বেদিক ঔষধ খেতে বলেছিলেন ডাক্তারবাবু। ছয়মাস পর ইউএসজি রিপোর্ট করে দেখা যায় সিস্ট সম্পূর্ণ মিলিয়ে গেছে। ২) নিশ্চিন্তপুরের কাশীনাথ বেরার ঘাড়ে একটি টিউমার ছিল উনি এই আয়ুর্বেদিক ডাক্তারবাবুর শরণাপন্ন হয়েছিলেন এবং ধৈর্য ধরে ঔষধ খেতে টিউমারটি সম্পূর্ণরূপে নিরাময় হয়ে যায়। ৩) হাওড়া জেলার ভাটোরা নিবাসী ৬৫ বছর বয়সি ঘনশ্যাম খাঁ অস্টিও আর্থারাইটিসের ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছিলেন, এই ডাক্তারবাবুর খোঁজ পেয়ে সেই ভাটোরা থেকে এসে চিকিৎসা করিয়ে অনেক সুফল পেয়েছেন। ৪)নিশ্চিন্তপুর অধিবাসী দম্পতি গোপীনাথ বেরা এবং পত্নী বুল্টি বেরা ১২ বছরের বৈবাহিক জীবনে একমাত্র সমস্যা ছিল বন্ধ্যাত্ব। অনেক প্রচেষ্টার পর শেষ পর্যন্ত এই ডাক্তারবাবু সহযোগিতায় তাদের এখন ছয় বছরের এক ফুটফুটে মেয়ে সংসার মাতিয়ে রেখেছে। ৫) খেপুত নিবাসী ২৪ বছর বয়সী সৌমেন পালের হৃদয় জনিত সমস্যায় পিতা প্রভাস পাল খুবই চিন্তিত ছিলেন। এই ডাক্তারবাবুর নিকট টানা দু’বছর ঔষধ খেয়ে এখন সম্পূর্ণ সুস্থ জীবনযাপন করছে সৌমেন। ৬) গোপিগঞ্জ নিবাসী শেখ আলাউদ্দিন খানের কিডনিতে পাথর পড়েছিল, উনি সোজা পৌঁছে গিয়েছিলেন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা করাতে ডাক্তার জয়দেব বর্মনের নিকট। এই ডাক্তারবাবুর পরামর্শ অনুযায়ী কিডনি থেকে পাথর বেরিয়ে যায় এবং উনি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠেন। ৭) খেপুত নিবাসী ১১ বছর বয়সী অর্পণ সামন্ত এলার্জি রোগের সমস্যায় ভুগছিল ছোটবেলা থেকে। এই ডাক্তারবাবুর খোঁজ পেয়ে অর্পনের মা মনিকা সামন্ত এসেছিলেন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা করাতে, টানা এক বছরের চিকিৎসায় অনেকটা সুস্থ দেখে খুশি অর্পনের পরিবারের লোকজন। এরকম অনেক রোগীরাই ভালো ফল পেয়েছেন এই আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায়। [•ডাক্তারবাবুর ফোন নম্বর:৯১৪৩০৬৪০৪৫]