নিজস্ব সংবাদদাতা: নিঃস্বার্থভাবে মহকুমা প্রশাসনকে সহযোগিতা করার জন্য ঘাটাল মহকুমার এই আদিবাসী যুবককে পুরস্কৃত করার সিদ্ধান্ত নিল ঘাটাল মহকুমা প্রশাসন। যুবকের নাম রাকেশ নায়েক। আদিবাসী সম্প্রদায়ের এই যুবকের বাড়ি দাসপুর-১ ব্লকের পোস্তঙ্কাতে।
ঘাটালের মহকুমা শাসক অসীম পাল বলেন, তফসিলি উপজাতিদের জাতিগত শংসাপত্র তৈরি করার ক্ষেত্রে ওই যুবক ধারাবাহিকভাবে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন। সেজন্যই রাকেশকে আমরা বিশেষভাবে পুরস্কার দিয়ে সম্মানিত করার পরিকল্পনা নিয়েছি।
রাকেশ বলেন, পত্রপত্রিকা পড়ে বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই জানতে পেরেছিলাম সরকারি বিভিন্ন সুযোগ পেতে হলে আমাদের জাতিগত শংসাপত্র থাকাটা অতি জরুরি। তাই পাঁচ-সাত বছর আগে থেকেই জাতিগত শংসাপত্র তৈরির জন্য আমি বারে বারে ব্লক ও মহকুমা শাসকের অফিসে যাই। কিন্তু ওই সময় শংসাপত্র নেওয়ার জন্য অফিস থেকে এতো নথির ঝামেলা থাকত যার ফলে আমাদের সম্প্রদায়ের মানুষের পক্ষে জাতিগত শংসাপত্র করা দূরূহ ব্যাপার হয়ে গিয়েছিল। আমরা তখন আবেদনই করতে পারিনি।
অসীমবাবু আসার পর জাতিগত শংসাপত্র পাওয়ার ক্ষেত্রে অবাঞ্ছিত কাগজপত্রের বোঝা কমান। নিয়মেরও সরলীকরণ করান। গত বছর রাকেশ ওই খবর পেয়ে অতি সহজেই নিজের শংসাপত্রটি করিয়ে নেন। রাকেশ বলেন, বর্তমান মহকুমা শাসক আদিবাসীদের ভগবান। শংসাপত্রের সরলীকরণ ছাড়াও তিনি আমাদের জন্য বহু কাজ করেছেন। তাই ওই ভগবান থাকাকালীন বাকীদের যাতে শংসাপত্রগুলি হয়ে যায় সেজন্য অন্যান্য আদিবাসীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কথা বলতে শুরু করি। বিগত কয়েক মাসে রাকেশ ওই ব্লকের হরিরাজপুর, দুবরাজপুর, রামদাসপুর, জনার্দনপুর, শ্রীরামপুর, ডিহিপলসা, কাদিলপুর, গোবিন্দপুর, অভিরামপুর,পোস্তঙ্কা সহ বেশ কয়েকটি গ্রাম ঘুরে ৫০০’রও বেশি উপজাতি ছাত্রছাত্রী সহ বিভিন্ন বয়সের মানুষের আবেদনপত্র বিডিও’র মাধ্যমে মহকুমা শাসকের দপ্তরে জমা দেন। রাকেশ বলেন, অনেক ক্ষেত্রে নিজের টাকা দিয়ে অন্যের নথি জেরক্স করে শংসাপত্রের জন্য জমা দিয়েছি।
মহকুমা শাসক বলেন, বেশ কিছু শংসাপত্র ইস্যু হয়ে গিয়েছে। বাকীগুলিও শীঘ্রই ইস্যু করে দেওয়া হবে। রাকেশ এইভাবে উদ্যোগ না নিলে এতো স্বল্প দিনে এত সংখ্যক আদিবাসীদের জাতিগত শংসাপত্রের আবেদনপত্র জমা পড়ত না। সেজন্যই তাঁকে উৎসাহ দিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিশেষ ভাবে পুরস্কৃত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।