তৃপ্তি পাল কর্মকার: ঘাটাল মহকুমায় সর্বকালীন বৃহত্তম জাতীয় পতাকা দিয়ে স্বাধীনতা দিবস পালন করল ঘাটাল ব্লকের নারায়ণপুর উত্তরপাড়া মিলন সংঘ ক্লাব। ওই ক্লাবটি ঘাটাল ব্লকের দেওয়ানচক-১ গ্রাম পঞ্চায়েত
এলাকায় রয়েছে। ওই ক্লাবের পক্ষ থেকে এবছর ৭৩ তম স্বাধীনতা দিবসের দিনে ১০০ মিটার তথা ২২৫ ফুটের বেশি লম্বা ) একটি জাতীয় পতাকা নিয়ে ঘাটাল মহকুমা জুড়ে প্রায় ৫০ কিলোমিটার পথ অতিক্রান্ত করে। পতাকাটি চওড়ায় ছিল ৫ মিটার তথা সাড়ে ১৬ ফুট।
ক্লাবের সভাপতি গৌতম দোলই (বড়) এবং সম্পাদক বিনয় প্রামাণিক বলেন, আজ ক্লাব প্রাঙ্গণ থেকে ১০০ মিটার লম্বা এবং পাঁচ মিটার চওড়া পতাকটিকে সারিবদ্ধ দাঁড় করিয়ে রাখা ১২-১৪টি মালবাহী গাড়ির ওপর তোলা হয়। ক্লাব সদস্য ও গ্রামবাসীরা গাড়ির ওপর দাঁড়িয়ে পতাকাটিকে ধরে রাখেন। তারপরই সারিবদ্ধ গাড়ির উপরে ধরে রাখা ওই পতাকাটি পর্যায়ক্রমে বাঘাগেড়িয়া, রাধানগর, ঘাটাল, দাসপুর, বকুলতলা, হরিরামপুর এবং সাহেবঘাটের ব্রিজ পেরিয়ে ফের নারায়ণপুরে পৌঁছায়। সঙ্গে ছিল আরও প্রায় ৪০টি বাইক। পতাকাটি ওই দীর্ঘ রাস্তার ওপর দিয়ে যাবার সময় রাস্তার দুদিকের অগুণিত মানুষ কেউ শাঁখ বাজিয়ে, হাততালি দিয়ে, ফুল ছড়িয়ে এবং বন্দেমাতরম ধ্বনি তুলে স্বাগতম জানিয়েছেন। গৌতমবাবু ও বিনয়বাবু বলেন, তাই সকাল সকাল ৯টায় ক্লাব থেকে বেরিয়ে আট ঘন্টা পথ পেরোতে কারোরই উৎসাহে ভাটা পড়েনি।
এটি ওই ক্লাবের দ্বিতীয় বর্ষের পরিক্রমা। ২০১৮ সালে একইভাবে একই পথ দিয়ে ৭৫ মিটারের একটি পতাকা নিয়ে পরিক্রমা করা হয়। প্রসঙ্গত ৭৫ মিটারের বেশি এবং পাঁচ মিটার চওড়া পতাকা তৈরির পরিকল্পনাটি ২০১৭ সালের মে-জুন মাসে প্রথম মাথায় আসে ওই ক্লাবের সদস্য তথা উত্তরপ্রদেশের বেনারসে কর্মরত স্বর্ণশিল্পী বুধন দোলইয়ের। সেই পরিকল্পনা মতোই প্রায় এক মাস ধরে ওই পতাকাটি তৈরি হয়ে যায়। পতাকার মধ্যে ১৭টি চক্র রয়েছে। ২০১৭ সালেই এক মাস ধরে উত্তর প্রদেশে পতাকাটি তৈরি হয়। তৈরি করতে খরচ পড়ে প্রায় ২০ হাজার টাকা। ওই ক্লাব চেয়েছিল, ২০১৭ সালের ১৫ আগস্ট এবছরের মতো করে ওই পতাকাটিকে মহকুমার একাংশ পরিক্রমা করাতে। কিন্তু ঘাটাল থানার তৎকালীন ওসি চিত্ত পাল ওই পতাকা পরিক্রমার অনুমতি না দেওয়ার ফলে তা বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে সেই থেকেই ক্লাবেই বাক্সবন্দি হয়ে পতাকাটি পড়েছিল। গত বছর প্রয়োজনীয় অনুমতি পাওয়ার পর মহকুমার মানুষকে বৃহত্তম পতাকাটি দেখানোর সুযোগ হয়েছে। এবার ওই পতাকা পরিক্রমাসূচিটিকে বাস্তবায়িত করতে ওই ক্লাবের সদস্য বংশী দোলই, গৌমত দোলই(ছোট)-সহ অন্যান্য সদস্যদের প্রচেষ্টা ছিল বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য।