কলকাতার পরে দাসপুরের তৈরি শর্ট ফ্লিম ‘আদুরী’ গেল আন্তর্জাতিক মঞ্চে!

কেবল ইচ্ছা শক্তির জোরে তিনি একের পরে স্বপ্ন সফল করেছেন! ৩০০ অধিক গান লিখে ও সুর দিয়ে গীতিকার হিসেবে সরকারি স্বীকৃতি পেয়েছেন৷ প্রযোজক হিসেবে হাতে খড়ি দেওয়ার পরেই পেলেন অভাবনীয় সাফল্য! তিনি ৬৩ বছর বয়সী প্রাক্তন সরকারি কর্মী প্রভাকর মাজি৷ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর-২ ব্লকের পলাশপাই গ্রামে বাড়ি প্রভাকরবাবুর৷ ছোটবেলা থেকেই গানের প্রতি ছিল তাঁর অগাধ ভালোবাসা৷ কাগজে দুই-এক লাইন লিখে গুনগুন করে তাতেই সুর লাগাতেন প্রভাকরবাবু৷ বয়স বাড়ার সাথে সাথে লেখার ইচ্ছাটা ক্রমশ যেন তাঁর নেশায় পরিণত হয়েছিল৷

ছবি সুটিং এর দৃৃশ্য-১

১৯৮১ সালে তাঁর লেখা গান প্রথম আকাশবাণী বেতার মাধ্যমে সম্প্রচারিত হয়৷ সেই সাথে স্বীকৃতি মেলে গীতিকার হিসেবেও৷ ২০১৬ সালের শেষের দিকে প্রযোজক হিসেবে তাঁর হাতেখড়ি হয় ‘মেঘেরপালক’ নামক একটি শর্ট ফ্লিমের মাধ্যমে৷

ছবি সুটিং এর দৃৃশ্য-২

এর পরে ‘পাঞ্চালী’ ও ‘আদুরী’ আরও দুটি ফ্লিম তিনি প্রযোজনা করেন৷ ২০১৭ সালে কলকাতা ফ্লিম ফেস্টিভ্যালে তাঁর তৈরি ছবি পাঞ্চালী স্থান পায়৷ চলতি বছর ওড়িশার ভুবনেশ্বরে ৯-১২ ফেব্রুয়ারি চার দিন ব্যাপী আয়োজিত আন্তর্জাতিক চলচিত্র উৎসব-২০১৯ এর চূড়ান্ত তালিকায় স্থান করে নেয় ‘আদুরী’৷ ছবিটির পরিচালক সুমন দাস জানিয়েছেন, ২০১৭ সালের শেষের দিকে ছবিটির কাজ শুরু হয়েছিল৷ শহুরে চটকদারী প্রেমিকের প্রতিশ্রুতি হজম না করে, গ্রামের সরল সাধারণ মানুষের জন্য নিজের প্রেম উজাড় করে গ্রামের মেয়ে আদুরী৷

ফ্লিম ফেস্টিভ্যালে দেশ-বিদেশের ছবির তালিকা

এই কাহিনীর মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন চারজন৷ ছবিটির অপর পরিচালক দিব্যেন্দু পোড়েল বলেন, ওড়িশা চলচিত্র উৎসবে প্রাথমিক ভাবে দেশ-বিদেশের ৯০ টি ছবি অংশ নেয়৷ তার মধ্যে ৫৭ টি ছবি প্রদর্শনের তালিকায় স্থান পেয়েছিল৷ ওই তালিকায় থাকা ভারতের ১২টি ছবির মধ্যে আমাদের আদুরী স্থান পেয়েছিল৷ ছবিটির প্রশংসা করেছেন দেশ-বিদেশের নামী পরিচালকেরাও৷ প্রভাকরবাবু বলেন, ছবিটি সুটিং হয়েছিল দাসপুরের পলাশপাই,জয়রামচক,খুকুড়দহ’র মত প্রতন্ত্য এলাকায়৷ বিপুল অর্থ ব্যয় করার সামর্থ্য ছিলনা৷ কেবল ইচ্ছে শক্তিই আমাকে প্রযোজক হিসেবে সফলতা দিয়েছে৷

ছবিটি প্রযোজক প্রভাকর মাজির

প্রভাকরবাবুর স্ত্রী বন্দনাদেবী বলেন, স্বামীর এই কাজের আমি বিশেষ কিছুই বুঝি না৷ তবে ওনাকে বাধা দিইনি কখনও৷ পেশায় ইঞ্জিনিয়ার বাড়ির দুই ছেলে সুশোভন ও সৌমেন বলেন, আমাদের বিশ্বাস ছিল যে ভাবে দরদ দিয়ে বাবা প্রতিটা কাজ করেন, একদিন না একদিন সফল হবেনই৷
প্রভাকরবাবুর এই সাফল্যে এখন খুশির হাওয়া তাঁর গ্রামেও৷ কেবল গ্রামের মানুষ নয়,এখন বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেকেই আসছেন প্রভাকরবাবুর সাথে দেখা করতে আসছেন৷

ঘাটাল মহকুমার সমস্ত আপডেট তে যুক্ত হন আমাদের সাথে!